উন্নয়নের পরে কেন বিপর্যয়, বৈঠকে প্রশ্ন মমতার

শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পুরুলিয়া জেলার জন্য অনেক কাজ করেছে। তারপরেও লোকসভা ভোটে কেমন এমন ফল হল তা মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। আমরা মানছি, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার যে ভাবে, যত নিবিড় ভাবে করা দরকার ছিল, তাতে ঘাটতি রয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৯ ০০:২৫
Share:

পুরুলিয়ার এত উন্নয়ন করেও কেন লোকসভা ভোটে বিপর্যয় হল, মুখ্যমন্ত্রী তা দলের জেলা নেতাদের কাছে জানতে চাইলেন। বুধবার দুপুরে বিধানসভায় নিজের অফিসে মন্ত্রী তথা জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো, জেলা পরিষষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো-সহ দলের ছয় বিধায়ককে নিয়ে বৈঠকে বসেন মমতা। সেখানেই ওই প্রশ্ন ওঠে।

Advertisement

শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পুরুলিয়া জেলার জন্য অনেক কাজ করেছে। তারপরেও লোকসভা ভোটে কেমন এমন ফল হল তা মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। আমরা মানছি, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার যে ভাবে, যত নিবিড় ভাবে করা দরকার ছিল, তাতে ঘাটতি রয়েছে।’’

একই সঙ্গে তাঁরা তৃণমূল নেত্রীকে এই জানান, লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের বিপর্যয়ের পিছনে ঝাড়খণ্ড সীমানায় জেলার ছ’টি বিধানসভার অবস্থিতি একটা অন্যতম কারণ। শান্তিরামবাবুর দাবি, ‘‘জেলার ছ’টি বিধানসভা এলাকার বড় অংশের বাসিন্দাদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে চিকিৎসা ও এমনকি বাজার-হাট করতে যেতে হয় ঝাড়খণ্ডের রাঁচী, জামসেদপুর, বোকারো কিংবা ধানবাদে। ঝাড়খণ্ডে বিজেপির একটা প্রভাব বরাবরই আছে। সেই কারণে ওই ছয় বিধানসভাগুলির ভোটারদের একটা বড় অংশ বিজেপির পক্ষে প্রভাবিত হয়েছেন।”

Advertisement

পুরুলিয়ায় বিজেপির বাড়বাড়ন্তের ইঙ্গিত মিলেছিল পঞ্চায়েত ভোটে। প্রায় পঞ্চাশটি পঞ্চায়েত দখল করে বিজেপি। বাম ও কংগ্রেসকে পেছনে ফেলে জেলা পরিষদে বিরোধী হিসাবে উঠে আসে গেরুয়া শিবির। তারপরেই লোকসভা নির্বাচনে দুই লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত হন তৃণমূলের প্রার্থী। মানবাজার ছাড়া জেলার সব ক’টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে যায় বিজেপি। তিনটি পুরসভাতেও একই চিত্র।

এই অবস্থায় কেন দলের এই বিপর্যয়, তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছেন দলের জেলা নেতৃত্ব। সেই আবহেই এ বার বিধায়ক, মন্ত্রী ও সভাধিপতিকে নিয়ে বৈঠক করে সেই বির্পযয়ের কারণ জানতে চান দলনেত্রী। পাশাপাশি নির্বাচনে হার-জিত আছেই, এই আপ্তবাক্য উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী দলের বিধায়কদের বলেছেন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। তৃণমূলের এক বিধায়কের কথায়, ‘‘বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন লোকসভায় পুরুলিয়াতে বিজেপির পক্ষে একটা হাওয়া কাজ করেছে। কিন্তু সেই পরিস্থিতির ক্রমশ বদল হচ্ছে। এই অবস্থায় নতুন করে সংগঠন ও জনসংযোগের কাজ করতে বলেছেন দলনেত্রী।”

শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘এ দিনের বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সাংগঠনিক ত্রুটি-বিচ্যুতি সামলে নেওয়া-সহ জনসংযোগ আরো বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।” দল সূত্রের খবর, জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতায় তৃণমূল ভবনে ফের পুরুলিয়ার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করার কথা তৃণমূল নেত্রীর। সেখানে থাকার কথা জেলা কমিটির সদস্য-সহ ব্লক স্তরের নেতা ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement