পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া। নিজস্ব চিত্র
সরস্বতী পুজোর খরচ বাঁচিয়ে দুই হোমের আবাসিকদের ভূরিভোজ করাল পুরুলিয়ার আদ্রার একটি ক্লাব। ‘ওয়্যারলেস ময়দান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন’ নামের ওই ক্লাবের কর্মকর্তা ও সদস্যেরা শুক্রবার দুপুরে মনিপুর গ্রামের ‘অরুণোদয় শিশু নিকেতন’ ও ‘অবশেষে’ নামের দু’টি হোমের আবাসিকদের খাওয়ান। মনিপুর কুষ্ঠ পুর্নবাসন কেন্দ্র পরিচালিত হোমগুলিতে থাকেন কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত পরিবারের ছেলেমেয়ে ও অসুস্থ বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। এ ছাড়া, কিছু অনাথ ছেলেমেয়ে থাকে ওই হোমে। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, মুরগির মাংস, চাটনি, পাঁপড়।
পলাশকোলায় ওয়্যারলেস ময়দানের পাশেই এ বার অনাড়ম্বর ভাবে সরস্বতী পুজো করে ক্লাবটি। কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজু সেন জানাচ্ছেন, তাঁরা ন্যূনতম খরচে পুজো সেরেছেন। বাকি টাকা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ওই দুই হোমের আবাসিকদের খাওয়ানোর জন্য। ক্লাবের অন্য দুই কর্মকর্তা বেকো পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য কৌশিক মুখোপাধ্যায়, ব্যবসায়ী শ্যামল দে জানাচ্ছেন, তাঁরা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে পুজোর জন্য টাকা সংগ্রহ করেন। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘টাকা সংগ্রহের সময়েই সবাইকে জানিয়েছিলাম, পুজোর খরচ বাঁচিয়ে বাকি টাকায় হোমের আবাসিকদের খাওয়ানো হবে।” তাঁরা জানান, হোমের তিনশো জনকে খাওয়াতে পরে সদস্যদের নিজেদেরও কিছু টাকা দিতে হয়েছে।
এ দিন সকালেই চাল-ডাল, আনাজের বস্তা, মাংস নিয়ে ক্লাবের সদস্যেরা হাজির হন মনিপুরে। রান্না করেছেন হোমের রাঁধুনিরা। ক্লাবের সদস্যেরা কখনও রান্নায় সাহায্য করেছেন, কখনও বা হোমের আবাসিকদের সঙ্গে গল্পগাছা করেছেন। কুষ্ঠ রোগাক্রান্তদের পরিবারের লোকজনকে দূরে না সরিয়ে তাঁদের সঙ্গে সারাটা দিন কাটানো, তাঁদের খাওয়ানোর এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন হোমের সম্পাদক নবকুমার দাস। তিনি বলেন, ‘‘হোমের ছোট ছেলেমেয়েগুলির সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। এটা ইতিবাচক দিক।’’