Clay Artisans IN Trouble

দীপাবলির মুখে আবারও দুর্যোগ, বিপাকে মৃৎশিল্পী

মৃৎশিল্পীদের দাবি, দুর্গার তুলনায় কালী প্রতিমার সংখ্যা বেশি থাকে। মাটির ও রঙের কাজও বেশি। ফলে মূর্তি কাঁচা থাকলে রঙের কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হবে তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫৯
Share:

প্রতিকূল আবহাওয়ায় বিপাকে প্রতিমা শিল্পীরা। তার মধ্যেই চলছে কাজ। প্লাস্টিকে ঢাকা প্রতিমা। বৃহস্পতিবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র ।

দানা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে জেলার বিভিন্ন অংশে। বুধবার মেঘলা আকাশের সঙ্গে বৃষ্টিপাত হয়েছে জেলার নানা প্রান্তে। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জেলায়। সেই সঙ্গেই দুর্গাপুজোর পরে আবারও কালীপুজোর মুখে টানা বৃষ্টির সম্ভাবনায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মৃৎশিল্পীদের কপালে। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিমা সরবরাহ করা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

বৃষ্টি মাথায় কী ভাবে কাজ করবেন, মাটি, রং ইত্যাদি কী ভাবে শুকোবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন শিল্পীরা। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই কোনও রকমে কাজ শেষ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। এ বছর বিশ্বকর্মা পুজো এবং দুর্গাপুজোর আগে নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টির ফলে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল মৃৎশিল্পীদের। প্রবল সমস্যার মধ্যে দিনরাত জেগে কাজ শেষ করেছিলেন তাঁরা। এ বার কালীপুজোর আগে ফের দুর্যোগের ঘনঘটা। মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, কালী প্রতিমার মাটি শুকোয়নি এখনও। সেই অবস্থাতেই প্লাস্টিকে মুড়ে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে হচ্ছে প্রতিমাকে। কবে রঙের কাজ করা সম্ভব হবে, জানেন না শিল্পীদের কেউই।

মৃৎশিল্পীদের দাবি, দুর্গার তুলনায় কালী প্রতিমার সংখ্যা বেশি থাকে। মাটির ও রঙের কাজও বেশি। ফলে মূর্তি কাঁচা থাকলে রঙের কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হবে তাঁদের। মহম্মদবাজারের মৃৎশিল্পী পলাশ সূত্রধর বলেন, “হাতে খুব বেশি সময় নেই। দ্রুত গতিতে মূর্তি তৈরির কাজ চলছে। তার মধ্যে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কাজ করতে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। রোদ না ওঠায় প্রতিমা শুকোচ্ছে না, রঙের কাজও শুরু করা যাচ্ছে না।’’ তিনি জানান, এ বছর তাঁদের ৬২টি বায়না এসেছে। ফলে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন না হলে প্রতিমা সম্পূর্ণ করতে বিস্তর বিপাকে পড়তে হবে।

Advertisement

সিউড়ি ২ ব্লকের ইন্দ্রগাছা গ্রামের শিল্পী মেঘনাদ পাল বলেন, “এ বছর প্রতিটা পুজোর আগেই প্রতিমা তৈরিতে বাধা তৈরি করেছে বৃষ্টি। ভেবেছিলাম কালীপুজো শান্তিতে পেরোবে, কিন্তু তা-ও হল না। আমি কারখানায় ২৪টা প্রতিমা তৈরি করছি, পাশাপাশি, ৫টি মন্দিরেও প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। কোথাও এখনও মাটি শুকোয়নি।’’ তিনি জানান, গ্যাসের আগুন ব্যবহার করে মাটি শুকানোর কাজ করতে হবে। তাতেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন সকলে।

বৃষ্টি চলছেই

সিউড়ি: ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-র প্রভাবে এ রাজ্যের যে জেলাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, সেই তালিকায় বীরভূম নেই। তবে, দক্ষিণবঙ্গের জেলা বীরভূমেও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ‘ল্যান্ডফল’ হওয়ার আগেই তার ইঙ্গিত মিলল। বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত জেলায় গড় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বুধবার বিকেল থেকেই আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। সন্ধ্যার পরে এবং রাতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে জেলায়। বৃহস্পতিবার সকালের পরে বৃষ্টি সে ভাবে না হলেও দিনভর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। দিনের তাপমাত্রাও নেমেছে বেশ কিছুটা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement