সংঘর্ষে আহতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
মকর সংক্রান্তির সকালে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের যাদবনগর এলাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার একটি মেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকেরা। সংঘর্ষের ঘটনায় দু’পক্ষের কুড়ি জনেরও বেশি জখম হয়েছেন। আহতদের প্রথমে স্থানীয় জয়পুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর গুরুতর আহত কয়েক জনকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় দলের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে তৃণমূলের জয়পুর ব্লক সভাপতি ইয়ামিন শেখের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বিবাদ উত্তরবাড় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ ঘোষের। শুক্রবার যাদবনগর লাগোয়া বাঁকা সিনি এলাকায় দিলীপ অনুগামীদের কয়েকজন মকর সংক্রান্তির মেলা দেখতে গেলে ইয়ামিন গোষ্ঠীর কর্মীরা তাঁদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
স্থানীয় তৃনমূল কর্মী কাজল খাঁ বলেন, ‘‘সংঘর্ষস্থল থেকে আমাদের বাড়ি একটু দূরে। বাবাকে মারধর করছে শুনে যাদবনগর বাজারে এসে দেখি জাকির, বাবু কোটাল-সহ আমাদের দলেরই কয়েকজন লাঠি, কাটারি নিয়ে মারপিট করে বেড়াচ্ছে। পুলিশের সামনেই ওরা আমার বাবা এবং কাকাকে মারল।’’ স্থানীয় বাসিন্দা সাকিলা বিবি বলেন, ‘‘বাঁকা সিনির মেলায় গন্ডগোলের সূত্রপাত। জাকির কিছুদিন আগে পর্যন্ত আইএসঅএফ করত। বিধানসভায় ভোটে তৃণমূল জিতে যাওয়ায় এখন ফের দলে ঢুকে আমাদের মতো পুরানো তৃণমূল কর্মীদের মারধর করেছে।’’
ইয়ামিন অবশ্য দলে অন্তর্দ্বর্ন্দ্বের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘‘মেলায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। দোষীরা শাস্তি পাবে।’’ যদিও তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান তথা এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘এলাকা দখলের লড়াই কি না বলতে পারব না, তবে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত নয়। ঘটনার আসল কারণ সামনে আসুক। এই ঘটনায় যে-ই যুক্ত থাকুক না কেন, দল কাউকে রেয়াত করবে না। প্রত্যেকের উপরেই দল কড়া নজর রেখেছে। দোষীরা শাস্তি পাবেই।’’