ছাত্রদের মারধর ঘিরে উত্তপ্ত সিউড়ি কলেজ

কলেজের ছাত্র সংসদ ও বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্ররোচনা ছাড়াই বুধবার কলেজে ঢুকে দাউদ ইব্রাহিম ও আজমত খান নামে দুই ছাত্রকে মারধর করে বহিরাগতেরা। দু’জনেই জখম হয়েছেন। দোষীদের শাস্তির দাবিতে এবং বহিরাগতদের কলেজে প্রবেশ বন্ধ করতেই এই আন্দোলন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫১
Share:

বিক্ষোভ: সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

কলেজে ঢুকে দুই পড়ুয়াকে মারধর করেছে বহিরাগতেরা। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে অশান্ত হল কলেজ। ছাত্র বিক্ষোভে ব্যাহত হল কলেজের প্রাতঃ বিভাগের পঠনপাঠন। বৃহস্পতিবার সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ঘটনা। কলেজের ছাত্র সংসদ ও বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্ররোচনা ছাড়াই বুধবার কলেজে ঢুকে দাউদ ইব্রাহিম ও আজমত খান নামে দুই ছাত্রকে মারধর করে বহিরাগতেরা। দু’জনেই জখম হয়েছেন। দোষীদের শাস্তির দাবিতে এবং বহিরাগতদের কলেজে প্রবেশ বন্ধ করতেই এই আন্দোলন।

Advertisement

ছাত্র সংসদদের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন হোসেন জানিয়েছেন, কলেজের মাঝ বরাবর রাস্তা চলে গিয়েছে। প্রায়ই বহিরাগতরা ঢুকে পড়ে। মদ্যপান থেকে নেশা, সবই চলে কলেজের মধ্যে। কাছেই ছাত্রীদের হস্টেল। তাঁদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়। সব মিলিয়ে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ যথেষ্টই। শেষ পর্যন্ত পুলিশের উপস্থিতি এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে দিবা বিভাগে ক্লাস নিয়মিত হলেও পড়ুয়াদের উদ্বেগ কেটেছে বলা যাচ্ছে না। কলেজের অধ্যক্ষ তপন পরিছা বলেন, “বুধবারের গণ্ডগোলের পরে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়েছিল। কলেজের ক্যাম্পাসের বেশ কিছুটা অংশ খোলা। দুই ভবনের মধ্যে সাধারণের ব্যবহারের জন্য একটা রাস্তা আছে। যার ফলে বাইরের লোক সহজেই ঢুকতে পারে। এ ছাড়াও ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর রয়েছে। এই মুহূর্তে পুরোপুরি বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল। তবে আগামী দিনে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।’’ তিনি জানান, আপাতত ঠিক হয়েছে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা যেন পরিচয়পত্র ব্যবহার করে। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের পরিচয় পত্র দ্রুতদেওয়া হবে। তবে, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ফিসবুক সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে।

যদিও বহিরাগতদের কলেজ ক্যাম্পাসে ঢোকা ছাড়াও গণ্ডগোলের মূল কারণ নিয়েই বেশি সংশয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্র নেতা ও কলেজ শিক্ষকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘ছাত্রভর্তি নিয়ে আগে ক্ষমতাসীন ও বর্তমান ক্ষমতায় থাকা ছাত্র সংসদের ছেলেদের দ্বন্দ্বটাই উদ্বেগের।’’ অভিযোগ, গত বার পর্যন্ত কাগজে কলমে অনলাইনে ছাত্রভর্তি হলেও ছাত্র সংদসের যথেষ্ট খবরদারি ছিল। কিন্তু, এ বার ক্ষমতাসীন ছাত্র সংসদ সেটা হতে দেয়নি। ঝামেলার সূত্রপাত সেখান থেকেই।

Advertisement

এই অবস্থাতেও কলেজে ভর্তি করানো নিয়ে বেশ কিছু উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীর কাছে টাকা নিয়েছে আগে ক্ষমতায় থাকা ছাত্রনেতারা। বাদ যাননি দলের প্রভাবশালী নেতার আত্মীয়ও। দিন কয়েক আগে তেমনই অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে অশান্তি হয় বর্তমানে সংসদে ক্ষমতায় থাকা ছাত্রনেতাদের সঙ্গে। আগামী ১৬ তারিখ নবীনবরণ। তার আগে ফের ঝামেলা লাগাতে পারলে দুই পাখি মরবে, এই উদ্দেশেই ঝামেলা হয়েছে বুধবার। সে কথা কার্যত মেনে নিয়েছেন আলাউদ্দিন ও তৃণমূল নেতারা। তবে কলেজে শান্তি বজায় রাখতে নেতাদের এগিয়ে আসা, শিক্ষকদের উদ্যোগ ও পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা চাইছেন কলেজ পড়ুয়ারা। পুলিশ পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement