আদালতে কমলকুমার। নিজস্ব চিত্র।
শিশু কেনা-বেচা কাণ্ডে ধৃত বাঁকুড়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ-সহ তিন জনকে তদন্তের জন্য শনিবার নিজেদের হেফাজতে নিল সিআইডি। শুক্রবারই ওই মামলার তদন্তভার পায় তারা। স্কুলের অধ্যক্ষ কমলকুমার রাজোরিয়া, সতীশ ঠাকুর ও স্বপন দত্তকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের শেষে এ দিন আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালত তাঁদের পাঁচ দিন সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এ দিনই কালপাথরের জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে গিয়ে সরেজমিনে ঘটনার তদন্ত করেন সিআইডির তদন্তকারীরা। ১৮ জুলাই বাঁকুড়ায় শিশু কেনাবেচা কাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। এই ঘটিনায় এখনও পর্যন্ত মোট ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে বাকি ছ’জন জেল হেফাজতে রয়েছেন।
এ দিন আদালত চত্বরে প্রিজ়ন ভ্যানের ভিতর থেকে সাংবাদিকদের কাছে কমলকুমার ও সতীশ অভিযোগ করেন, “তৃণমূল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে আমাদের ফাঁসাচ্ছে।” বাঁকুড়া ১ ব্লকের এক তৃণমূল নেতার নাম করে তাঁরা অভিযোগ তোলেন, “ওই নেতা আমাদের হুমকি দিতেন।” যদিও অভিযোগ মানেনি তৃণমূল শিবির।
শিশু কেনা-বেচা কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরেই ধৃত অধ্যক্ষের সঙ্গে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের ছবি নেট-মাধ্যমে পোস্ট করে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। সেই প্রসঙ্গ টেনে জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা দাবি করেন, “ধৃতেরা সবাই বিজেপি করেন। সুভাষবাবুর সঙ্গে ওই অধ্যক্ষের ছবি তারই প্রমাণ। এখন সত্য ঘটনা লুকোতেই আমাদের দলের নেতার বিরুদ্ধে তাঁরা ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন।” সুভাষবাবু অবশ্য প্রথম থেকেই দাবি করেছেন, শিশুদের একটি অনুষ্ঠানে তিনি আমন্ত্রিত হিসেবে গিয়েছিলেন। সেখানে ওই অধ্যক্ষও আমন্ত্রিত ছিলেন। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি অধ্যক্ষকে চেনেন না। এ দিন সুভাষবাবু বলেন, “বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। ঘটনার যথাযথ তদন্ত হোক।”
এ দিন জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে তদন্তে গিয়ে স্কুলের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন সিআইডির তদন্তকারীরা। অধ্যক্ষ ও এই ঘটনায় ধৃত ওই স্কুলের শিক্ষিকা সুষমা শর্মার আবাসনেও তল্লাশি চালান তাঁরা। পরে, এই ঘটনার অভিযোগকারী কালপাথরের বাসিন্দা ষষ্ঠী বাউরির সঙ্গেও তদন্তকারীরা কথা বলেন। পরে ষষ্টীবাবু বলেন, “সে দিন কী ঘটেছিল, তদন্তকারীরা তা জানতে চেয়েছিলেন। যে ভাবে বাচ্চাগুলোকে জোর করে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল, সে কথা তাঁদের জানিয়েছি।”