‘যদি তুমি শিশু হও (অথবা ১৮ বছরের নীচে বয়স), নির্যাতনের শিকার বা অবসাদগ্রস্ত থাকো তা হলে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ১০৯৮ নম্বরে ফোন করো।’ ১০৯৮ নম্বর শিশুদের কাছে আরও সহজবোধ্য করে তুলে কৌশলী হল চাইল্ডলাইন। দুবরাজপুর পুরসভার উদ্যোগে শহরের পাঁচটি এলাকায় চাইল্ডলাইনের বিজ্ঞাপনে সেই বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে। সেখানে লেখা ছোটদের বিপদ-আপদে সাহায্য করার সহজ অঙ্ক দশ-নয়-আট—১০৯৮।
গত কয়েক বছরে ‘চাইল্ডলাইন ১০৯৮, ডে অ্যান্ড নাইট’ এই প্রচার, দেশের সব কটি থানা, শিশুকল্যাণ সমিতি কিংবা বাসে-ট্রেনে, স্কুলে অত্যন্ত পরিচিত। ক্রমাগত এই নম্বর নিয়ে প্রচারের ফলে শিশু অধিকার লঙ্ঘনের যে কোনও ঘটনাতেই ফোন সংখ্যা অনেক বেড়েছে। চাইল্ডলাইন জানাচ্ছে, শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতন রুখতে ২০১৬ সালে পকসো আইনে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের তরফে এই টোল ফ্রি নম্বর চালু হয়। তার পরে শিশুর যে কোনও অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার ঘটনার খবর পেতে একমাত্র সম্বল হয়ে উঠেছে ওই নম্বর। শিশু অধিকার লঙ্ঘন নিয়ে চাইল্ডলাইনের পক্ষ থেকে যেখানেই প্রচার চলে, সেখানেই শিশুদের বলা হয়, কোনও অসুবিধা হলেই ১০৯৮ নম্বরে ফোন করো।
সেই নম্বর মনে রাখার সুবিধার জন্য দশ, নয়, আট রীতিতে ভেঙে দুবরাজপুর পুরসভার সেই বিজ্ঞাপন নজর কেড়েছে। চাইল্ডলাইনের জেলা কোঅর্ডিনেটর দেবাশিস ঘোষ, কর্মী মধুমিতা হাজরারা বলছেন, ‘‘এতে শিশুদের নম্বর মনে রাখতে সুবিধা হবে। এক থেকে দশ গুণতে শিখেছে এমন শিশুও সমস্যায় পড়লে ফোন করতে পারবে।’’ চাইল্ডলাইন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাল্যবিবাহ, যৌন হেনস্থা, পরিবারে অত্যাচারিত হওয়া, অবসাদ, চিকিৎসার জন্য সাহায্য, শিশুশ্রম এড়াতে, নিঁখোজ সহ নানা সমস্যা এমনকি গল্প করতে চেয়ে বহুল প্রচারিত হেল্পলাইন নম্বরে ফোন আসতেই থাকে। যত বেশি করে বিজ্ঞাপিত হচ্ছে ফোন আসার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
নম্বর কাজ করছে কিনা সেটা দেখতে জেলার প্রতি এলাকা থেকে টেস্ট কল করা হয়। জুলাই মাসে এমন ২৫০ টেস্ট কল সহ মোট সাতশোর বেশি কল এসেছে। শিশুরা নিজেরা সাহায্য চেয়ে ফোন করেছে এমন সংখ্যা ৩০। সেগুলির মধ্যে আশ্রয় চেয়ে, অত্যাচারিত হয়ে, যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে, বাল্য বিবাহ থেকে রেহাই পেতেও ফোন হয়েছে। এটাকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছে চাইল্ডলাইন। জেলা চাইল্ডলাইন জানাচ্ছে, স্কুলে স্কুলে বিজ্ঞাপন হয়েছে আগেই। বিজ্ঞাপন হয়েছে থানা, হাসপাতালে। তবে আরও বেশি সংখ্যক এলাকায় ১০৯৮ নম্বরকে ছড়িয়ে দিতে পঞ্চায়েত ও পুরসভাকে অনুরোধ করা হচ্ছে। কিছু পঞ্চায়েত ও দুবরাজপুর পুরসভায় চাইল্ড লাইনের বিজ্ঞাপন হলেও এখনও জেলার বহু পঞ্চায়েত ও পুরসভা সে কাজ হয়নি।