প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালে নাবালিকার সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে তদন্তে গিয়েছিলেন ‘চাইল্ডলাইন’-এর সদস্যেরা। সেখানে গিয়ে মেয়েটিকে না পেয়ে অন্য রোগীদের কাছে খোঁজ করে তাঁরা জানতে পারেন, প্রসবের পরে বাড়ি ফিরে গিয়েছে মেয়েটি। তবে সদ্যোজাতকে দিয়ে গিয়েছে হাসপাতালেরই এক আয়ার কাছে। বাঁকুড়া ‘চাইল্ডলাইন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ওই আয়ার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে শিশুটিকে।
এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভূমিকা। কী ভাবে আয়া ওই নাবালিকার কাছ থেকে শিশুটিকে নিলেন, সে প্রশ্ন উঠেছে। বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার তরুণ পাঠক বুধবার রাতে বলেন, “চাইল্ডলাইন ওই সদ্যোজাতকে আয়ার কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। এ নিয়ে আইনি যা পদক্ষেপ করার, চাইল্ডলাইনের তরফেই করা হবে। তবে এমন ঘটনা কেন ঘটল, তা হাসপাতালের তরফেও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ ‘চাইল্ডলাইন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনই বাঁকুড়ার শিশুকল্যাণ কমিটির নির্দেশে শিশুটিকে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ‘চাইল্ডলাইন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওন্দা থানা এলাকার বছর পনেরোর ওই নাবালিকা সোমবার হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। মেয়েটি অবিবাহিত হওয়ায় বিষয়টি হাসপাতালের তরফে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার হাসপাতালে তদন্তে যান ‘চাইল্ডলাইন’-এর সদস্যেরা। বাঁকুড়া ‘চাইল্ডলাইন’-এর কো-অর্ডিনেটর সজল শীল জানান, হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেয়েটি এ দিন সকালেই ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে। ‘চাইল্ডলাইন’-এর সদস্যেরা হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অন্য রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। অভিযোগ, তাঁরা জানান, ‘অবৈধ’ সন্তান বলে সদ্যোজাতকে সঙ্গে নিয়ে যায়নি মেয়েটি। হাসপাতালেরই এক আয়ার হাতে শিশুটিকে তুলে দিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে সে।
‘চাইল্ডলাইন’ সূত্রের দাবি, এ কথা জানার পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ওই আয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁদের সদস্যেরা। ওই আয়া তখন হাসপাতালে ছিলেন না। তিনি বাঁকুড়া শহরেরই বাসিন্দা। তাঁকে শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টারের অফিসে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানেই তাঁর কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে ‘চাইল্ডলাইন’। সজলবাবু বলেন, “ওই আয়ার কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে শিশুকল্যাণ সমিতির নির্দেশ অনুযায়ী, হোমে পাঠানো হয়েছে।’’ কী ভাবে আয়া হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে নিয়ে গেল, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ওই আয়ার দাবি, ‘‘মেয়েটি হয়তো শিশুটিকে দেখত না, ফেলে দিত। তাই আমি নিয়ে গিয়েছি।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে শিশুটিকে তুলে না দিয়ে বেআইনি ভাবে কেন নিজের দায়িত্বে নিলেন, সে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি ওই আয়া। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “ওন্দা থানা গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে।’’ নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে এ দিন বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।