এই ফ্লেক্স খোলা নিয়েই গোলমাল। রঘুনাথপুরে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে বাসস্ট্যান্ডের অদূরে। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স খোলাকে কেন্দ্র করে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের এমসিসি (মডেল কোড অব কনডাক্ট বা আদর্শ আচরণবিধি) টিমের কর্মীদের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। শনিবার রঘুনাথপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঘটনাটি ঘটে। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার অন্যত্র সরকারি জায়গা থেকে বিভিন্ন দলের এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে সরকারি বিজ্ঞাপনে নেতা-নেত্রীদের ছবি সরানো শুরু হলেও বিশেষ গোলমাল হয়নি।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের পাশে সরকারি জায়গায় তৃণমূলের লাগানো ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ শীর্ষক বড় একটি ফ্লেক্স খুলতে শুরু করেন এমসিসি কর্মীরা। ফ্লেক্সটি লাগিয়েছিলেন তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যাক্ষ হাজারি বাউরি।
সূত্রের খবর, খবর পেয়ে কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন হাজারিবাবু। কেন ফ্লেক্স খুলে দেওয়া হচ্ছে, এ নিয়ে এমসিসি দলের কর্মীদের সঙ্গে বিবাদে জড়ান তাঁরা। হাজারিবাবুর দাবি, ‘‘নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আর্দশ আচরণবিধি চালুর কথা ভাল ভাবেই জানি। কিন্তু প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দলকে সরকারি জায়াগায় লাগানো ফ্লেক্স খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার কথা। দল সেই নির্দেশ না মানলে তারপরে প্রশাসন সেই প্রচার সামগ্রী খুলে দেবে। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রশাসন আমাদের ফ্লেক্স খোলার নির্দেশ না দিয়ে নিজেরাই আগ বাড়িয়ে সেটা খুলে দিচ্ছিল বলে প্রতিবাদ করেছি।’’
তবে প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, আর্দশ আচরণবিধি চালু হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরকারি জায়গায় থাকা রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের ছবি দেওয়া পোস্টার, ব্যানার বা ফ্লেক্স খুলে দেওয়াটাই নিয়ম। এ ক্ষেত্রে সেটাই করা হয়েছে।
রঘুনাথপুর ১ ব্লক প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, কয়েকদিন আগেই সর্বদলীয় বৈঠকে জানানো হয়েছিল, নির্বাচন ঘোষণার পরেই সরকারি জায়গায় থাকা দলের ফ্লেক্স, পোস্টার, ব্যানার, পতাকা সরিয়ে ফেলতে হবে। শুক্রবার বিকেলে ঘোষণার পরেও ওই ফ্লেক্স খোলা হয়নি বলেই এ দিন এমসিসি কর্মীরা তা খুলতে যান।
সূত্রের খবর, পুরুলিয়া জেলার প্রতি ব্লকে এমসিসি-এর দু’টি করে দল তৈরি করা হয়েছে। তারা পঞ্চায়েত অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি অফিসে যান। বহু জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া দুয়ারে সরকার কর্মসূচির ফ্লেক্স খুলেছেন তাঁরা। কোথাও সে ভাবে সমস্যা হয়নি।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায় এমসিসি দল নেমে পড়েছিল। এ দিন বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরেও তৎপরতা ছিল। এসডিও (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত সমস্ত দফতরকে এ নিয়ে সচেতন করেন। শনিবার সকাল থেকেই পূর্ত ও বিদ্যুৎ দফতর, বিষ্ণুপুর পুরসভা, মহকুমা দফতরের তরফে পোস্টার, ব্যানার নানা জায়গা থেকে খুলে ফেলা হয়। বাঁকুড়া শহরেও ওই সংক্রান্ত হোডিং খুলে নেয় পুরসভা। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “সমস্ত ব্লকেও সরকারি জায়গা থেকে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের ছবি, ফ্লেক্স খুলে দিতে বলা হয়েছে।”