বোলপুরের রূপপুরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজ পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় দল। নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনার বাড়ি না-পাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, কারও অ্যাকাউন্টে বাড়ির টাকা ঢোকেনি, কেউ আবেদন করার পরেও বাড়ি পাননি। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর শ্রীনিকেতন ব্লকের রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রূপপুর গ্রামে। জেলা প্রশাসনের তরফে কেউ কিছু বলতে চাননি ঘটনা নিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে বৃহস্পতিবার সিউড়িতে পৌঁছয় দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। এ দিন সকালে দুই সদস্য রূপপুর গ্রামের লোহারপাড়া এলাকায় যান। আবাস যোজনায় যাঁদের নাম তালিকায় ছিল, তাঁরা বাড়ি পেয়েছেন কি না, বরাদ্দ টাকা সম্পূর্ণ হাতে পৌঁছেছে কি না, টাকা পাওয়া সত্ত্বেও কোন বাড়ি অসমাপ্ত রয়েছে কি না— এ সব খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় দল। সঙ্গে বিডিও বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস সহ সরকারি আধিকারিকেরা।
গ্রামবাসীদের একাংশ আবাস যোজনার বাড়ি না-পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানান। তাঁদের অভিযোগ, যাঁরা আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন, তাঁদের বাড়িই কেবলমাত্র বেছে বেছে দেখানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় দলকে। বাড়ি যাঁরা পাননি, তাঁরা কী ভাবে থাকছেন, দেখানো হচ্ছে না। এমন বেশ কিছু অভিযোগ এ দিন নথিবদ্ধ করেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য। ২০১৯-’২০ থেকে ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে তৈরি হওয়া বাড়িগুলি কাদের নামে এসেছিল, প্রকৃত প্রাপকেরা বাড়ি পেয়েছেন কিনা, তাঁদের জবকার্ডের টাকা ঢুকেছে কি না, সে-সবও এ দিন খুঁটিয়ে মিলিয়ে দেখেন তাঁরা। গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লকের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের কতখানি মিল রয়েছে, এলাকার কত জন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার পেয়েছেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়েছে।
দুই সদস্য এ দিন কথা বলেন বাড়ি-প্রাপকদের সঙ্গে। নথি সংগ্রহের জন্য প্রাপকদের ছবিও তুলে রাখেন তাঁরা। তবে, কেন্দ্রীয় দল আসার খবর শুনে রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেরই দাসপাড়া এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে এ দিন সকালেই আবাস যোজনার বাড়ির বোর্ড লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেগুলিও এ দিন খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় দল। এর পরে দলটি রূপপুর, বল্লভপুর, পশ্চিম বাহাদুরপুর গ্রাম ঘুরে দেখে। আবাস যোজনা নিয়ে জেলার দেওয়া তথ্যে তাঁরা সন্তুষ্ট কি না, সেই সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গ্রামবাসী মায়া লোহার, পূর্ণিমা লোহার, লক্ষ্মণ লোহারদের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করা সত্ত্বেও আবাস যোজনার বাড়ি আমরা পাইনি। অথচ এমন অনেকে আছেন, যাঁরা এক বার বাড়ি পেয়েও আবার পাচ্ছেন। সে কথা আমরা কেন্দ্রীয় দলের কাছে জানিয়েছি। আমরা চাই প্রকৃত গরিবেরা আগে বাড়ি পাক।” এই অভিযোগের কোনও উত্তর প্রশাসনের তরফে মেলেনি। বোলপুর শ্রীনিকেতনের বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, “কেন্দ্রীয় দলকে আমরা আমাদের দিক থেকে সহ রকম সাহায্য করা হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলায় আরও দু’দিন কেন্দ্রীয় দলটির থাকার কথা।