মেলার মাঠে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তেরা। নিজস্ব চিত্র
পৌষমেলার নিরাপত্তার জন্য এ বার নিরাপত্তা বাহিনী পাঠাল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের নির্দেশ, বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনে পৌঁছয় সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের (এক্স-সার্ভিসম্যান) নিয়ে তৈরি বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত ১০০ জনের দল। তাঁরা শুক্রবার মেলা মাঠ পরিদর্শন করেন। এ দিনই বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিকেরা ওই দলটিকে তাদের দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন। একই সঙ্গে মেলা মাঠে ঢোকার জন্য কোথায় কোথায় গেট হবে, কোথায় ওয়াচটাওয়ার হবে, কোথায় সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল রুম হবে, সে-সবও এ দিন দলটিকে ঘুরিয়ে দেখান বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিকেরা।
এ বার পৌষমেলার নিরাপত্তা, স্টল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা এবং বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্বভারতীর তরফ থেকে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই আইআইটি খড়্গপুরের তৈরি করে দেওয়া সফটঅয়্যারের মাধ্যমে এ বছর প্রথম অনলাইনে পৌষমেলার স্টল বুকিং শুরু করা হয়। একই ভাবে এ বছর মেলার নিরাপত্তার জন্য দিল্লি থেকে বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীতে পাঠানো হয় ১০০ জনের এক্স-সার্ভিসম্যানের একটি দলকে। বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তারক্ষী এবং এক্স-সার্ভিসম্যানের দলটি রাজ্য পুলিশের সহায়তায় পৌষমেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য বদ্ধ পরিকর।’’
এ বার পৌষমেলায় অনলাইনে স্টল বুকিং এবং স্টলের ভাড়া-সহ কিছু বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সংঘাতের জেরে মেলামাঠে খুঁটি পোঁতার কাজও করা যায়নি অনেক দিন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জট কেটেছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুসারে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মেলা শেষ করতে হবে। তাই এ বার ৬ দিনের পরিবর্তে চার দিন মেলা চলবে এবং স্টল তুলে মেলা প্রাঙ্গণ খালি করে দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত দু’দিন সময় দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের। মেলা ঘিরে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে চান বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সে জন্যই নিরাপত্তার এমন বিশেষ বন্দোবস্ত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। মেলার চার দিন এবং স্টল তোলার দু’দিন—এই ছ’দিনই বিশেষ দলটি মোতায়েন থাকবে মেলামাঠে।
খাকি জামা, কালো প্যান্ট, মাথায় জংলা রঙের টুপি—এই পোশাকেই তাঁদের শুক্রবার দেখা গেল মেলা প্রাঙ্গণে। এই পোশাকেই তাঁরা মেলার নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাবেন। ফলে, এ বার রাজ্য পুলিশ, বিশ্বভারতীর নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী এবং ১০০ জনের বিশেষ দল মিলে মেলায় নজরদারি চালাবে। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, ১০০ জনের এক্স-সার্ভিসম্যানের দলটিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে মেলার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হবে। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পেলেই রাজ্য পুলিশের সহায়তা নিয়ে দ্রুত তারা সেই পরিস্থিতি সামাল দেবে। এ দিন সকাল থেকেই দলটির সদস্যেরা মেলা মাঠের এক প্রকার দখল নিয়ে নেন।