Tapan Kandu Murder

Tapan Kandu murder: ঝালদার তপন-খুনের প্রত্যক্ষদর্শী মৃত নিরঞ্জনের বাড়িতে সিবিআই, খুনের পুনর্নির্মাণ

৬ এপ্রিল নিজের ঘর থেকে নিরঞ্জনের দেহ মেলে। পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা শুরু করার পরে, আদালতের নির্দেশে তদন্তভার নেয় সিবিআই।

Advertisement

প্রশান্ত পাল  , দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

পুরুলিয়া ও ঝালদা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৭:২৬
Share:

নিরঞ্জন বৈষ্ণবের বাড়িতে তদন্তকারীরা। নিজস্ব চিত্র।

পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের বাড়িতে তদন্তে গেল ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দল। সোমবার বিকেলে ওই দলের সঙ্গে ছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরাও। যেখানে নিরঞ্জনের ঝুলন্ত দেহ মিলেছিল, সে জায়গা পরীক্ষা করে দেখেন তাঁরা। এ দিনই তপন খুনের চার প্রত্যক্ষদর্শীকে নিয়ে ফের ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সন্ধ্যায় ঝালদা থানার এক অফিসারকে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

Advertisement

৬ এপ্রিল নিজের ঘর থেকে নিরঞ্জনের দেহ মেলে। পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা শুরু করার পরে, আদালতের নির্দেশে তদন্তভার নেয় সিবিআই। ঘটনার পর থেকে ঘরটি তালাবন্ধ রেখেছে পুলিশ। এ দিন তালা খুলিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা আটকে পরীক্ষা করেন ফরেন্সিক দলের সদস্যেরা। সিবিআই সূত্রের খবর, ঝুলন্ত দেহের পাশে একটি বালতি মিলেছিল। ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ার জন্য সেটি ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে কি না, যে কাপড়ের ফাঁসে দেহ ঝুলছিল সেটি দেহের ওজন রাখতে সমর্থ কি না, এ সব খতিয়ে দেখা হয়। ঘটনাস্থল মেপেও দেখা হয়।

অকৃতদার নিরঞ্জনের দেহের কাছেই একটি ‘সুইসাইড নোট’ মিলেছিল। তাতে তপন খুনের পর থেকে মানসিক অবসাদে ভোগার কথা লেখা ছিল বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। এ দিন নিরঞ্জনের বৌদি পবিতা বৈষ্ণবের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, খুনের ঘটনার পর থেকে নিরঞ্জনের মধ্যে কোনও পরিবর্তন তাঁরা লক্ষ্য করেছিলেন কি না, পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কখন থানায় ডাকত, কত ক্ষণ পরে ফিরতেন, জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁর আচরণে কোনও পরিবর্তন দেখা যেত কি না, ঠিক মতো খেতেন কি না বা তাঁদের কিছু জানিয়েছিলেন কি না— এ ধরনের নানা বিষয় জানার চেষ্টা করেছেন তদন্তকারীরা। পরে পবিতা বলেন, ‘‘সিবিআই আধিকারিকেরা নিরঞ্জন সম্পর্কে কিছু কথা জানতে চাইছিলেন। যা জিজ্ঞেস করেছেন, জানিয়েছি।’’

Advertisement

পড়শি বিমল বৈষ্ণবের বাড়িতে গিয়ে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। খুনের ঘটনার পরে, নিরঞ্জন বিমলের বাড়িতেই রাতে থাকছিলেন বলে পরিবার জানায়। ৬ এপ্রিলের আগের রাতেও সেখানেই শুয়েছিলেন তিনি। ভোরে উঠে গিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেন বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। এ দিন বিমল বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার পরে, নিরঞ্জন খানিক আতঙ্কেই ছিলেন। সিবিআই আধিকারিকেরা যা জানতে চেয়েছেন, জানিয়েছি।’’

রবিবার ঘটনার তিন প্রত্যক্ষদর্শী যাদব রজক, সুভাষ কর্মকার ও সুভাষ গরাইকে ডেকেছিল সিবিআই। এ দিন তাঁদের পাশাপাশি, আর এক প্রত্যক্ষদর্শী প্রদীপ চৌরাসিয়াকেও ডাকা হয় ঝালদায় সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে। কিছু ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পরে, তাঁদের নিয়ে ফের ঘটনাস্থলে যান ফরেন্সিক দল ও সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে খুঁটিয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া হয়। যখন ঘটনাটি ঘটে তখন কে, কোথায় ছিলেন, পরস্পরের মধ্যে কতটা দূরত্ব ছিল, কার দৃষ্টি কোন দিকে ছিল— এ সব তথ্য জেনে তাঁদের সে জায়গায় দাঁড় করিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে এ দিন আরও কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement