উত্তর নারায়ণপুরে তদন্তে সিবিআই। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য পুলিশকে বাইরে রেখেই তদন্তের কাজ করতে দেখা গেল বীরভূমে আসা সিবিআইয়ের আধিকারিকদের। এর আগে জেলার কাঁকরতলা, ইলামবাজার, নলহাটি ও মল্লারপুরে ঘটনাস্থল চিনিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে তদন্তের নানা কাজে রাজ্য পুলিশের সাহায্য নিতে দেখা গিয়েছিল সিবিআইকে। সোমবার শান্তিনিকেতনে দেখা গেল অন্য ছবি।
এ দিন বোলপুরের উত্তর নারায়ণপুর এলাকায় এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগের তদন্তে আসে সিবিআইয়ের একটি দল। কাঁকরতলা, ইলামবাজার, নলহাটি, মল্লারপুরের পর এ দিন প্রথমে শান্তিনিকেতন থানায় এসে পৌঁছন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আইজি পদমর্যাদার মহিলা জয়েন্ট ডিরেক্টর সম্পদ মীনার নেতৃত্বে সিবিআই আধিকারিকদের ন’জনের একটি দল সিআরপিএফ জওয়ানদের নিয়ে থানায় আসে। সেখানে তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিবিআইয়ের কর্তারা। এরপর সেখান থেকে সিবিআইয়ের দল সোজা চলে যায় উত্তর নারায়ণপুরে। ওই গ্রামে ভোটের সময় বিজেপিকে সমর্থন করায় এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। মহিলার পরিবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তৃণমূলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। ওই নির্যাতিতা বোলপুরে এসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দলের অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
গ্রামে যাওয়া সিবিআইয়ের দলের সঙ্গে ছিলেন শান্তিনিকেতন থানার ওসি দেবাশীষ পন্ডিত-সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকেরা। নির্যাতিতার বাড়িতে ঢুকতেই এ দিন প্রথমে পরিবারের তরফে রাজ্যের পুলিশকে বাধা দেওয়া হয়। নির্যাতিত বাবাকে বলতে শোনা যায়, “আপনি তো সিবিআই অফিসার নন, আপনি ঢুকবেন না, আপনাদের জন্যই আমরা অনেক কষ্ট করেছি।” এরপর রাজ্যের পুলিশকে বাইরে রেখেই পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে শুরু করে তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে যান সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা।
ওই দিন ঠিক কী ঘটেছিল, কেন ওই মহিলাকে নির্যাতন করা হয় এমন বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি এ দিন তাঁর বাড়ির বিভিন্ন জায়গার ছবিও তোলে সিবিআই। ফরেন্সিক দলের মাধ্যমে বাড়ি থেকে বিভিন্ন নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের বেশি ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সঙ্গে পড়শি দু-এক জনের সঙ্গেও কথা বলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। এরপর সেখানে এক আধিকারিককে রেখে বাকিরা অন্যত্র রওনা দেন।
শনিবার ও রবিবারের পর, এ দিন ফের ইলামবাজারের গোপালনগর গ্রামে যায় সিবিআই। ভোট গণনার দিন ওই গ্রামে বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও শাসক দলের তরফে সমস্ত ঘটনাটি অস্বীকার করা হয়। এ দিন ফের দীর্ঘক্ষণ গৌরবের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সিবিআইয়ের দল। গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকেরা। ঘটনার দিন যাঁরা আহত গৌরবকেহাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গেও এ দিন কথা বলেন তারা। কীভাবে গৌরবের রক্তাক্ত দেহ পড়েছিল তাও অভিনয় করে দেখান এক গ্রামবাসী।