সিউড়ি আদালতে অনুব্রত। — নিজস্ব চিত্র।
গরু পাচার মামলার তদন্তে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠল সিবিআই। অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ দুই তৃণমূল নেতা সহ মোট চার জনকে বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারীরা। তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি সংগ্রহের পাশাপাশি বয়ান রেকর্ড করা হয় বলে সিবিআই সূত্রের খবর। ঘটনাচক্রে এ দিনই দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বীরভূম ছেড়ে বর্ধমানের উদ্দেশে রওনা দেন।
গরু পাচার পাচার মামলার তদন্তে নেমে জানুয়ারি মাসে দু’বার বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সিউড়ি শাখায় অভিযান চালান সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। সেখান থেকে প্রথমে ১৭৭টি ও পরে ১৫৩টি ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টের খোঁজ মেলে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। সেই অ্যাকাউন্টগুলি খতিয়ে দেখতে সিউড়ি ২ ব্লকের হরিপুর ও ধোবা গ্রামেও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলতে যান তদন্তকারীরা। তাঁরা সিবিআইকে জানান, তাঁদের নামে যে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তা-ই তাঁরা জানেন না। ওই সমস্ত ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টে বিপুল টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও সিবিআইয়ের দাবি।
ওই ‘কেলেঙ্কারিতেও’ নাম জড়িয়েছে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের বলে দাবি সিবিআইয়ের। তারই তদন্তে এ দিন শান্তিনিকেতনের রতনকুঠিতে, তাঁদের অস্থায়ী ক্যাম্পে এসে পৌঁছন গরু পাচার মামলার তদন্তকারী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্য সহ চার সিবিআই অফিসার। রতন কুঠিতে একে একে হাজিরা দেন অনুব্রতের ব্যক্তি সহায়ক তথা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অর্ক দত্ত, অনুব্রতের বাড়ির পরিচারক বিজয় রজক, বোলপুর শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় (মুন) এবং বাহিরি-পাঁচশোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শুভঙ্কর সাধু।
এর আগেও গরু পাচার মামলায় এঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে খবর, ওই চার জনের নামেও সমবায় ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেগুলিতে অনেক টাকার লেনদেন হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই চার জনের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টও খোলানো হয়েছে বলে সিবিআইয়ের সন্দেহ। সে-সবের হদিস পেতেই এ দিন তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কয়েক জনের বয়ান রেকর্ড করা হয় বলে সিবিআই সূত্রের খবর। যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি ওই চার জন। বোলপুরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক আধিকারিককেও এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। কিছু নথি সংগ্রহ করে বিকেলে দলটি আসানসোল রওনা দেয়।