BJP

১৬ জন বিজেপি নেতার নামে মামলা

বোলপুর-রাজগ্রাম রোড ধরে মল্লারপুর থানার দিকে মিছিল যেতে গেলে পুলিশ ব্যরিকেড করে বাধা দেয়। তা টপকে বিজেপি কর্মীরা থানার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি বাধে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৪৯
Share:

পথে: মল্লারপুরে মিছিল বিজেপির। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ হেফাজতে মল্লারপুর থানায় মৃত নাবালকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও আসেনি। ফলে, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দও কাটেনি। তবে, ওই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারা ক্রমেই চড়ছে মল্লারপুরে।

Advertisement

মৃত নাবালক মল্লারপুরের রেলপাড় খালাসিপাড়ার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, চুরির ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে তাকে বৃহস্পতিবার বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করেছিল। বৃহস্পতিবার রাতে থানা চত্বরেই তার দেহ পাওয়া যায়। বিজেপি এবং তৃণমূল, দু’দলই মৃতের পরিবারকে তাদের সমর্থক বলে দাবি করে। পুলিশি অত্যাচারে নাবালকের মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগে এবং দোষী পুলিশ আধিকারিকের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার বিজেপি নেতৃত্বের উপস্থিতিতে জাতীয় সড়কে চার ঘণ্টার বেশি অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্য দিকে, তৃণমূলের বিধায়কের উপস্থিতে তারাপীঠ শ্মশানে মৃত নাবালকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। জাতীয় সড়ক অবরোধের ঘটনায় বিজেপি-র জেলা সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য নেতা অর্জুন সাহা-সহ ১৬ জন নেতা-কর্মীর নামে জামিন অযোগ্য মামলা করেছে জেলা পুলিশ।

মৃত নাবালকের পরিবারকে অবশ্য এ দিন সকাল থেকেই এলাকায় দেখা যায়নি। রাতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে মল্লারপুরে আসেন। তখন কিন্তু, মৃতের বাবা ও মা বাড়িতে পাওয়া যায়। ঘণ্টাখানেক তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরে অনন্যাদেবী চলে যান মল্লারপুর থানায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিরুপম সিংহ।

Advertisement

বিজেপি-র ডাকা বনধে শনিবার মল্লারপুরে থমথমে পরিবেশ ছিল। বাহিনা মোড় থেকে মল্লারপুর স্টেশন রোড এবং মল্লারপুর বাজারের ৯০ শতাংশ দোকান বন্ধ ছিল। বিজেপি-র রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খানের নেতৃত্বে বিরাট মিছিল বেরোয় মল্লারপুরে।

বোলপুর-রাজগ্রাম রোড ধরে মল্লারপুর থানার দিকে মিছিল যেতে গেলে পুলিশ ব্যরিকেড করে বাধা দেয়। তা টপকে বিজেপি কর্মীরা থানার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি বাধে। বিজেপি-র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের নির্দেশে কর্মীরা ব্যারিকেড না টপকে রাস্তার উপর বসে পড়েন। সেখানেই ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভ দেখানো হয়।

সৌমিত্র খান জানান, পুলিশ হেফাজতে নাবালক মৃত্যুর ঘটনায় দোষী পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবিতে রাজ্যের সমস্ত থানায় যুব মোর্চার নেতৃত্বে বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মৃতের পরিবারকে তৃণমূল লুকিয়ে রেখে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে চেয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে দিচ্ছে না।’’ শুক্রবারই তারাপীঠ শ্মশানে দাঁড়িয়ে মৃত নাবালকের বাবা জানিয়েছিলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁদের কোনও অভিযোগ নেই। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, আজ না হোক, দু’দিন পরে মৃতের পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে মুখ খুলবেই। সূত্রের খবর, এ দিন অনন্যাদেবীদেরও পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁদের কোনও ক্ষোভ বা নািলশ নেই বলে জানিয়েছেন মৃতের বাবা।

লুকিয়ে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে মল্লারপুরের বাসিন্দা তথা ময়ূরেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘একটা আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে বিজেপি সস্তার রাজনীতি করছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ওই নাবালকের মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে না। তবে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় আইনানুগ যা কিছু করার, তা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement