দফতরের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
পরিষেবা পেতে হয়রানি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পুরুলিয়ার হুড়া ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়দের একাংশ। বৃহস্পতিবারের ঘটনা। দফতরের কর্মীদের বাইরে বের করে দিয়ে দফতরের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতো ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা খুলে কর্মীদের দফতরে ঢোকার ব্যবস্থা করেন। ঘটনায় একাধিক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে দফতরের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঝামেলার খবর পেয়ে দফতরে পৌঁছন বিডিও (হুড়া) ধ্রুবাঙ্কুর ঠাকুরও। তিনি বলেন, “ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাজকর্ম নিয়ে কিছু মানুষ অভিযোগ তুলছেন। টাকার বিনিময়ে কাজ হয়, এমন অভিযোগও উঠেছে। আমরা বলেছি, নির্দিষ্ট অভিযোগ জানাতে। অভিযোগ পেলে, তদন্ত হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই দফতরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কিছু দিন ধরে সরব এলাকাবাসীর একাংশ। এলাকায় ‘দুর্নীতি-বিরোধী জমিরক্ষা সংগ্রাম কমিটি’ নামে একটি সংগঠনও গড়ে উঠেছে। সংগঠনের মুখপাত্র সীতারাম মাহাতোর অভিযোগ, “আমাদেরই একটি পৈতৃক জমি মিউটেশনের জন্য আবেদন করেছিলাম বছর দু’য়েক আগে। তার শুনানি হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। অথচ, এখনও মিউটেশন-প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি।” স্থানীয়দের অনেকে ভোগান্তিতে পড়লেও দফতরের কর্তাদের কোনও হেলদোল নেই, দাবি তাঁর। ওই দিনও বিধি মেনে আবেদনের পরেও মিউটেশনে দেরি হওয়া, ‘ঘুষ’ ছাড়া কোনও কাজ না-হওয়া, তফসিলি উপজাতিদের জমি ‘বেহাত’ হয়ে যাওয়া, অফিসে দালাল-রাজ চলার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ চলে।
ঘটনা হল, কিছু দিন আগে পুরুলিয়া রবীন্দ্রভবনে এক অনুষ্ঠানে খোদ প্রসেনজিৎকে প্রকাশ্যে ওই দফতরের কাজকর্ম নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছিল। শুক্রবার তিনি বলেন, “দলের কৃষক ও খেতমজদুর সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছি। বিভিন্ন স্তরের মানুষজন ভূমি দফতরের কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ জানান। বিধবা, তফসিলি জাতি, উপজাতির অনেকে, যাঁরা আধিকারিকদের সঙ্গে সে ভাবে কথা বলতে পারেন না বা দেখভালের কেউ নেই, তাঁদের কারও কারও জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে। গরিব মানুষজনকে দফতরে কাজে গিয়ে অকারণে হয়রান হতে হয়।”
দফতরের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে টাকা ছাড়া কাজ না-করারও অভিযোগ উঠছে জানিয়ে তাঁর অভিযোগ, “দফতরের অধিকারিকের কাছে অভিযোগ নিয়ে জানতে চেয়েও কোনও সদুত্তর মেলেনি।” প্রয়োজনে দফতরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান প্রসেনজিৎ।
ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, “যে সব অভিযোগ উঠেছে, তা বাঞ্ছনীয় নয়। কোন কাজ, কত দিন আটকে রয়েছে বা অর্থের বিনিময়ে কোন কাজ হয়, তা নিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানাতে বলেছি। অভিযোগ পেলে, তদন্ত হবে।”