বন্দি: রঘুনাথপুর-আদ্রা রাস্তার পাশে বেঁধে রাখা হয়েছে সেই রাখালকে। নিজস্ব চিত্র
চড়া রোদে গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা এক যুবক। রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে গাড়ি, অটো, মোটরবাইক। মোবাইলে ছবিও তোলেন অনেকে। কিন্তু তাঁকে ছাড়াতে এগিয়ে আসেননি কেউ। সেই খবর চাউর হতেই কিছুক্ষণ পরে মুক্ত করা হয় আদ্রার বেনিয়াসোলার কমলেশ রায় নামের ওই যুবককে।
মঙ্গলবারের ওই ঘটনার এক দিন পরে বুধবার সন্ধ্যায় রঘুনাথপুর থানায় গিয়ে কমলেশ অভিযোগ দায়ের করেন। কার্তিক গড়াই নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁকে গাছে বেঁধে রাখা ও মারধর করার অভিযোগ তোলেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
আদ্রা-রঘুনাথপুর রাস্তায় জয়চণ্ডী রেলগেটের অদূরে ঘটনাটি ঘটেছিল মঙ্গলবার দুপুরে।
কমলেশকে বাঁধা হয়েছিল কেন?
সে দিন কার্তিকে দাবি করা একটি ভিডিয়ো ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, প্রতিদিনই কমলেশ ১৫-২০টি মোষ নিয়ে এসে ছেড়ে দিয়ে চলে যান। তারপরে মোষের দল তাঁর জমিতে নেমে আনাজ, খামারে রাখা খড় খেয়ে, ছড়িয়ে দিয়ে যায়। কয়েকবার তিনি কমলেশকে এলাকায় মোষ চরাতে বারণ করেছিলেন। তাতে কান না দেওয়ায় শাস্তি হিসেবে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন।
তাঁর দাবি, প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ না হওয়ায় তিনিই শাস্তি দিতে নামেন।
তবে তাঁর বিরুদ্ধে কার্তিকের তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন কমলেশ। পাল্টা তাঁর দাবি, ‘‘মঙ্গলবার সকালে একটি মোষ হারিয়ে গিয়েছিল। সেটি খুঁজতেই ওই এলাকায় গিয়েছিলাম। হঠাৎ কার্তিক-সহ কয়েকজন এসে আমার মোষ তাঁদের আনাজ, খড় খেয়ে নষ্ট করছে বলে দাবি করে মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে।’’ তাঁর দাবি, ওই এলাকায় আগেও তিনি কয়েকবার মোষ চরাতে গিয়েছিলেন। তবে বরাবর তিনি মোষগুলির উপরে নজর রাখেন। কারও বাগানে বা খামারে ঢুকলে তাদের সরিয়ে দেন।
বুধবার সন্ধ্যায় কমলেশকে থানায় নিয়ে যান বেনিয়াসোল এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মুনমুন সিংহ চৌহান। তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত অমানবিক ঘটনা। কমলেশ এক দিন পরে ঘটনাটি আমাদের জানিয়েছিলেন। তাই অভিযোগ করতে দেরি হয়েছে। পুলিশকে আমরা বলেছি, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।” এ দিন অবশ্য কার্তিককে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।