অভিযুক্ত তৃণমূল

পার্টি অফিসের সামনে বোমা

শাসকদলের অফিস সংলগ্ন এলাকা থেকেই উদ্ধার হল দু’টি ড্রাম ভর্তি প্রায় ৬০টি তাজা বোমা! এ বারও ঘটনাস্থল সেই নানুরের থুপসড়া পঞ্চায়েত। বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্যই ওই বোমা মজুত করেছিল শাসকদল। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ মানতে চায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নানুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৬ ০২:০৬
Share:

বোমা উদ্ধার চলছেই। রবিবার নানুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।

শাসকদলের অফিস সংলগ্ন এলাকা থেকেই উদ্ধার হল দু’টি ড্রাম ভর্তি প্রায় ৬০টি তাজা বোমা!

Advertisement

এ বারও ঘটনাস্থল সেই নানুরের থুপসড়া পঞ্চায়েত। বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্যই ওই বোমা মজুত করেছিল শাসকদল। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ মানতে চায়নি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই পঞ্চায়েত এলাকারই তাকোড়া গ্রাম লাগোয়া মাঠ থেকে ৮০টি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার সকালেও ওই একই গ্রামের স্কুল লাগোয়া মাঠ থেকে আরও তিনটি বোমা উদ্ধার হয়। আর রবিবার সকালে ওই পঞ্চায়েতেরই দান্যপাড়া গ্রামের একটি খামারে সরষের গাদা থেকে দু’ড্রাম বোমা উদ্ধার করল পুলিশ। তারপরই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কারণ ওই খামার থেকে প্রায় ৩০ মিটার দূরত্বেই রয়েছে তৃণমূলের থুপসড়া অঞ্চল কমিটির অফিস।

Advertisement

ঘটনা হল, রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দখল তো বটেই বিভিন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও নানুর এলাকায় গোলাগুলির ব্যবহার দীর্ঘ দিনের। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দান্যপাড়া লাগোয়া ওই পঞ্চায়েতেরই হাড়মুড় গ্রামে ব্যাপক অশান্তি হয়। র‍্যাফ, কমব্যাট ফোর্স এবং পুলিশের উপস্থিতিতেই একদল দুষ্কৃতী ভোট চলাকালীন বোমাবাজি করতে করতে ওই গ্রামের স্কুলের দুটি বুথের দখল নেয়। ব্যালট বাক্স ভেঙে, ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ভোট বানচাল করে দেয় তারা। দীর্ঘ ক্ষণ গোলাগুলি ছাড়াও সে দিন পোড়ানো হয় বহু বাড়ি, ধানের পালুই।

সেবার ওই দুই বুথের ভোট বাতিল করে পুনঃনির্বাচন করাতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। তাই বোমা উদ্ধারের ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যারা যখন শাসক থাকে তারাই তখন ক্ষমতায় থাকার জন্য হাতে বোমা-গুলি তুলে নেন। গোলাগুলি লড়াইয়ে কেউ পিছপা হতে চান না।’’

বাম জমানাতেও এই থুপসড়া বোমা-বারুদের আঁতুড়ঘরই ছিল। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনন্দ ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘যে গ্রামে বোমা উদ্ধার হয়েছে সেখানে এখনও তৃণমূলেরই প্রভাব রয়েছে। অদূরেই রয়েছে তৃণমূলেরই পার্টি অফিস। সেই হিসাবে বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না ভোটে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য কারা ওইসব বোমা মজুত করেছিল।’’ তৃণমূল প্রার্থী গদাধর হাজরা সে অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্কই নেই। দুষ্কৃতীরাই বোমা মজুত করেছিল।’’

যার খামার থেকে ওই বোমা উদ্ধার হয়, সেই নিয়ামত সেখের এ দিন দেখা মেলেনি। তবে তাঁর স্ত্রী নুন্নেহার বিবি বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে খামারবাড়িটা অনেক দূরে বলে আমরা ব্যবহার করি না। স্থানীয় বাসিন্দারাই তা ব্যবহার করেন। তাই ওখানে সরষের গাদার ভিতরে কারা বোমা রেখেছিল বলতে পারব না।’’ পুলিশ জানায়, কারা কি কারণে ওই বোমা মজুত করেছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement