বেলিয়াতোড় রেঞ্জের আধিকারিক মহিবুল ইসলাম বলেন, “নজরদারির কোনও অভাব নেই। আমরা নিয়মিত নজরদারি চালাই। তার পরেও কোনও কোনও জায়গায় এ ভাবে বেআইনি বিদ্যুতের বেড়া দিয়ে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন চাষিরা। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরকেও তৎপর হতে বলা হয়েছে।”
নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ায় ফের হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। শনিবার ভোরে খাবারের খোঁজে ফসলের জমিতে হানা দিয়েছিল হাতিটি। চুয়াগাড়া হাইস্কুলের পাশে একটি গমের জমি থেকে পূর্ণবয়স্ক ওই দাঁতালের দেহ উদ্ধার হয়। হাতির শুঁড়ে গভীর ক্ষত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে বন দফতরের অনুমান, ফসল বাঁচাতে জমির চারপাশে লাগানো তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে হাতিটির।
অভিযোগ, জমির ফসল রক্ষা করতে বাঁকুড়ার জঙ্গললাগোয়া এলাকায় অবাধে বেআইনি ভাবে বিদ্যুতের বেড়া দিচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। ফলে হাতির জন্য তা দিনে দিনে মরণফাঁদ হয়ে উঠছে। হাতির মৃত্যুর এই ঘটনা বন দফতরের নজরদারি নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিল। যদিও নজরদারির অভাব রয়েছে এমন অভিযোগ মানতে চায়নি বন দফতর।
বেলিয়াতোড় রেঞ্জের আধিকারিক মহিবুল ইসলাম বলেন, “নজরদারির কোনও অভাব নেই। আমরা নিয়মিত নজরদারি চালাই। তার পরেও কোনও কোনও জায়গায় এ ভাবে বেআইনি বিদ্যুতের বেড়া দিয়ে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন চাষিরা। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরকেও তৎপর হতে বলা হয়েছে। এই হাতিটির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করাব। জমির চারপাশে লাগানো বিদ্যুৎবাহী তারে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট চাষির বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাঁকুড়ায় হাতি মানুষের সঙ্ঘাত নতুন ঘটনা নয়। ফি বছর দলমা থেকে খাবারের খোঁজে এ রাজ্যে আসা হাতির দল পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে সটান হাজির হয় বাঁকুড়ার বিভিন্ন জঙ্গলে। হাতির হানায় বিঘার পর বিঘার জমির ফসলের ক্ষতি হয়। পাশাপাশি লোকালয়েও হাতির দল হানা দিয়ে ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি করে। মাঝেমধ্যে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটে। ফলে হাতি-মানুষের সঙ্ঘাত এখন রোজনামচা বাঁকুড়ার বিভিন্ন জঙ্গললাগোয়া এলাকায়।
এক দিকে যেমন বাঁকুড়ার বিভিন্ন জঙ্গলে প্রতি বছর হাতিদের আনাগোনা বাড়ছে, অন্যদিকে বসতি ও চাষযোগ্য জমির পরিমাণও বাড়ছে। আর তার জেরে হাতি-মানুষের সঙ্ঘাত আরও বাড়ছে। যার পরিণাম কখনও কখনও জীবন দিয়ে চোকাতে হচ্ছে হাতিদের। স্থানীয়দের দাবি, এ ব্যাপারে বন দফতর আরও একটু তৎপর হলে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হয় না হাতিগুলিকে।