প্রতীকী চিত্র।
মোবাইলের ব্যাটারি জুড়ে আলো জ্বালতে গিয়ে তা ফেটে ডান হাতের বুড়ো আঙুল বাদে তালু সমেত বাকি চারটি আঙুল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ার। সোমবার রাত আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোলের কাঁকরতলা থানা এলাকার পারশুণ্ডি গ্রামে। আকাশ বাউড়ি নামে আহত ওই পড়ুয়াকে প্রথমে নাকড়াকোন্দা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পারশুণ্ডি গ্রামের উপর পাড়ায় বাড়ি আকাশের। গ্রামেরই আশুতোষ উচ্চবিদ্যালয়ের পড়ুয়া। বাবা বাহাদুর বাউড়ি দিনমজুর। মা সুলেখা বাউড়ি গৃহবধূ। ওই দম্পতির তিন সন্তান। দুই মেয়ে, এক ছেলে। আকাশই ছোট। পরিবার সূত্রের খবর, সোমবার রাতে মোবাইল ফোনের একাধিক বাতিল ব্যাটারির সঙ্গে তার জুড়ে এলইডি ল্যাম্প জ্বালানোর চেষ্টা করছিল ছেলে। কোনও কারণে নেগেটিভ-পজেটিভের গোলমালে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে আকাশ। পড়শি যুবক, শুভাশিস বাউড়ি যাঁর গাড়িতে আকাশকে হাসপাতালে পৌঁছনো হয়েছিল, তিনি বলছেন, ‘‘ছেলেটার ডান হাতটার যা অবস্থা হয়েছে চোখে দেখা যায় না।’’
মোবাইল ফোনে চার্জ দিয়ে কথা বলা বা গেম খেলার সময় ফোন ফেটে দুর্ঘটনা বা প্রাণহানির ঘটনা প্রথম নয়। এ রাজ্যেও একাধিক উদাহরণ রয়েছে। তবুও সচেতনতায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। তার মাসুল দিতে হল ছোট্ট আকাশকেও। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আবহে এখন স্কুল এখন ছুটি। হাতে অফুরন্ত সময়। এখন মোবাইল ফোনের বাতিল ব্যাটারি দিয়ে এলইডি ল্যাম্প জ্বালানো স্থানীয় বাচ্চাদের খেলায় পরিণত হয়েছে। এক সঙ্গে দু’তিনটি ব্যাটারি জুড়ে লাইট জ্বালিয়ে সাইকেলে ঘুরেও বেড়াচ্ছে অনেক বাচ্চা। সেই চেষ্টাই সোমবার সন্ধ্যায় করছিল বছর বারোর আকাশ। কে জানত এ ভাবে মোবাইলের ব্যাটারি নিয়ে খেলতে গিয়ে নিজের ডান হাত খোয়াতে হবে।
আকাশের হাতের অবস্থা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকেরাও। তাঁদের পরামর্শ, বাচ্চাদের সাবধানে রাখুন। বিশেষ করে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময়। পুলিশ বলছে, দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এর পরে ওই অঞ্চলে বাচ্চারা যাতে মোবাইল ফোনের বাতিল ব্যাটরি নিয়ে আলো জ্বালানোর চেষ্টা না-করে সেটা নিয়ে সচেতনতা প্রচার করা হবে।