প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলির প্রচারে পুরুলিয়ায় পদযাত্রা করবে বিজেপি। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নীতিযাত্রা’। আগামী ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারি জেলার চার প্রান্ত থেকে যাত্রা শুরু হবে। দলের জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, হুড়া, রঘুনাথপুর, ঝালদা ও বলরামপুর থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে পদযাত্রা শুরু হয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জেলা শহরে প্রবেশ করবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনৈতিক জমি দখলের লক্ষ্যে তৃণমূলের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির পাল্টা এই কর্মসূচি কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
দলের তরফে জানা যায়, হুড়ায় কাশীপুরের বিধায়ক কমলাকান্ত হাঁসদা ও পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, রঘুনাথপুরে স্থানীয় বিধায়ক বিবেকানন্দ বাউরি ও পাড়ার বিধায়ক নদিয়ারচাঁদ বাউরি এবং দলের রাঢ়বঙ্গ জ়োনের আহ্বায়ক বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, ঝালদায় রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ও জয়পুরের বিধায়ক নরহরি মাহাতো এবং বলরামপুরে স্থানীয় বিধায়ক বাণেশ্বর মাহাতো ও জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা পদযাত্রা শুরু করবেন। বিবেক বলেন, “নীতিযাত্রা শহরে পৌঁছনোর পরে শহরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে একটি সভা হবে। সেই সভায় রাজ্য নেতৃত্ব হাজির থাকবেন।”
ঘটনা হল, ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের প্রধান জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলি প্রচারের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় মন্দিরে পুজো দেওয়া, এলাকার বিশিষ্ট মানুষজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা, বাড়ি বাড়ি যাওয়া-সহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রচার ও জনসংযোগ সারছেন ‘দিদির দূত’রা।
বিবেক এ দিন বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলি আমরা মানুষের কাছে এই যাত্রার মাধ্যমে তুলে ধরব। অনেকেই জানেন যে, কেন্দ্রের একাধিক প্রকল্পের নাম বদলে রাজ্য সরকার নিজেদের প্রকল্প বলে চালাচ্ছে। যদিও কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শনে আসার আগেই ফের সাইনবোর্ডে প্রকল্পগুলির নাম বদলে কেন্দ্রের নামে করা হয়েছে।” একশো দিনের কাজের প্রকল্প-সহ পঞ্চায়েত স্তরে জেলায় গত পাঁচ বছরে সাড়ে তিনশো কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে বিবেক আরও বলেন, “এই সমস্ত দুর্নীতির প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে আমরা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করব।” জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিসগুলিতেও দুর্নীতি চলছে, অভিযোগ তাঁর।
পাল্টা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছেন না। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। বিজেপি নেতারা গ্রামে ঢুকতে পারবেন না। এই পদযাত্রার মধ্যে দিয়ে তাঁরা হাওয়া বোঝার চেষ্টা করছেন।” দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় দল জেলায় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করে গিয়েছেন। কোথাও তো কোনও বেনিয়ম ধরা পড়েনি। উল্টে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করেও কেন আজও তাঁরা মজুরি পাননি, মানুষের কাছে সেই অভিযোগ শুনতে হয়েছে দলের সদস্যদের।”