কোমা পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ফলপ্রকাশের পর, ২ মে থেকে ঘরছাড়া ছিলেন কয়েক’শো বিজেপি কর্মী। ১২ দিন পেরিয়ে শুক্রবার ঘরে ফিরেই তৃণমূল যোগ দিলেন সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা পঞ্চায়েতের ওই কর্মীরা। তাঁরা স্বেচ্ছায় দলবদলের দাবি করলেও বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, দলের কর্মীরা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের ভয়ে ঘরছাড়া হয়েছিলেন। আবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার শর্তেই ঘরে ফেরানো হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ মানতে চাননি।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হয়েছেন দলের কর্মীরা। মারধর, হুমকি, বোমাবাজি বাদ যায়নি কিছুই। সেই তালিকায় ছিল সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা পঞ্চায়েতের একাধিক এলাকাও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ মে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই ওই অঞ্চলের কয়েকশো বিজেপি কর্মী বাড়ি ছাড়া হন। তাঁরা কেউ সিউড়ি শহরে, কিংবা শহরের বাইরে বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। সেই খবর পেয়ে তৃণমূল নেতারা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে খবর।
এর পরে সমস্ত ব্যবস্থা হতে শুক্রবার সকালে কোমা পঞ্চায়েতের জানুরি গ্রামের কয়েকশো বিজেপি কর্মী গ্রামে ফেরেন। তাঁদের কেউ ছিলেন তৃণমূল নেতারা মোটরবাইকে, কেউ আবার টোটোয়। গ্রামে তাঁদের মিষ্টিমুখ করিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। বাড়ি ফিরে খুশি ওই সমস্ত বিজেপি কর্মীরা। জানুরি গ্রামের প্রাক্তন বিজেপি নেতা বৃন্দাবন ডোম বলছেন, ‘‘১২ দিন পরে বাড়ি ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে। তৃণমূলের নেতারাই আমাদের বাড়ি ফেরানোর সমস্ত ব্যবস্থা করেন।’’ একই কথা বলেছেন প্রশান্ত ডোম নামে আর এক জন। দলের জেলা সহ সভাপতি উত্তমকুমার রজক অবশ্য বলছেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ দেওয়ার শর্তেই ঘরে ফেরানো হয়েছে।’’
যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দাবি, যে সমস্ত বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া ছিলেন, তাঁরা সকলেই সামনে সারিতে থেকে রাজনীতি করেছিলেন। তাই নির্বাচনে পরাজয়ের পরে হামলার আশঙ্কায় ছিলেন। সেই ভয় থেকেই তাঁরা ঘর ছেড়ে চলে যান। বাস্তবে এলাকায় কোনও অশান্তি হয়নি বলেও দাবি তৃণমূলের। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথ আমাদের পাথেয়। তাঁর বার্তা মেনেই ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ। গ্রামে শান্তির বাতাবরণ রাখতেই ওঁদের মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে।’’