ডিআরএমের সঙ্গে আলোচনায় সুভাষ সরকার। নিজস্ব চিত্র
ট্রেন বাতিল করা সংক্রান্ত বিতর্কের ব্যাপারে এ বার পদক্ষেপ করলেন দুই জেলার দুই বিজেপি সাংসদ। শুক্রবার আদ্রায় ডিআরএমের সঙ্গে দেখা করে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, ‘‘বাইশটি ট্রেন বাতিল করার প্রস্তাব দক্ষিণ-পূর্ব রেলের নেই। সেটা ডিআরএম স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছেন।’’ ডিআরএমের সঙ্গে তাঁরও একই কথা হয়েছে বলে পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন।
১৫ ফেব্রুয়ারির এক একটি সুপারিশপত্র বুধবার ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, পণ্য পরিবহণের বাড়তি চাপ সামাল দিতে ৩১ মে পর্যন্ত ১৮ জোড়া ট্রেন পুরো বাতিল ও ৪ জোড়া ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করতে অনুরোধ করা হয়েছে আদ্রার ডিআরএমকে। শোরগোল পড়ে যায় পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায়। ডিআরএম (আদ্রা) নবীন কুমার তখন জানিয়েছিলেন, তিনি ওই সুপারিশপত্রে সই করেননি।
শুক্রবার সুভাষবাবু দেখা করে বেরনোর কিছুক্ষণ পরে, রেলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, ট্রেন বাতিলের প্রস্তাবে কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেননি। যা দেখে রেলকর্মী সংগঠনগুলির দাবি, প্রস্তাব যে এসেছিল সে কথা পরোক্ষে মেনে নেওয়া হয়েছে। হাওড়া ও খড়্গপুর ডিভিশন ছুঁয়ে আসা দূরপাল্লার ট্রেন বাতিলের প্রস্তাব আদ্রা একক ভাবে করতে পারে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সংগঠনের নেতাদের কেউ কেউ।
পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময়বাবুও বলছেন, ‘‘ট্রেন বাতিল করার ক্ষমতা আদ্রা ডিভিশনের আধিকারিকদের নেই। সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জিএম বা রেল বোর্ড।’’ তাঁর অভিযোগ, ভোটের কথা ভেবে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়াচ্ছে তৃণমূল। সুভাষবাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল হাওয়ার উপরে এই নিয়ে রাজনীতি করছে।’’ পরে তিনি টুইট করেন, ‘‘কোনও ট্রেন বাতিল হবে না।’’ তবে তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ট্রেন বাতিলের প্রস্তাব আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষ নিয়েছিলেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মানুষ রেল কর্তৃপক্ষ তথা বিজেপির বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে দেখে তড়িঘড়ি দুই সাংসদ আসরে নেমেছেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘জন-আন্দোলনের চাপে পড়ে ট্রেন বাতিলের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। আমরা পরিকল্পনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নামছি।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো বলছেন, ‘‘ট্রেন বাতিল করার অধিকার কোনও আধিকারিকের নেই। তাঁদের দায়িত্ব ট্রেন চালানো। আমরা প্রতিনিধি দল নিয়ে ডিআরএমের সঙ্গে দেখা করব। প্রয়োজনে রেলমন্ত্রীকেও জানাব।”