বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁকে যত বারই ডাকা হবে, তত বারই সিআইডির কাছে হাজির হবেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণ হলে রাজনীতি থেকে সরে যাবেন। এমস কাণ্ডে সিআইডির তলব নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে বার বার ডাকুক। তবে এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে বিজেপির পতাকা ছেড়ে রাজনীতি থেকে নির্বাসন নিয়ে নেব।’’ পাশাপাশি, রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন বিজেপি বিধায়ক। যার প্রেক্ষিতে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
বিধায়কের মেয়ে মৈত্রী দানার এমসে চাকরি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নেমেছে রাজ্য সিআইডি। বাঁকুড়ার বিধায়ক প্রভাব খাটিয়ে এমসে মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন, এমন অভিযোগে এর আগে একাধিক বার নীলাদ্রিশেখরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। বিধায়কের বাড়িতেও যান সিআইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। শুক্রবার আবার তাঁকে তলবি চিঠি পাঠিয়েছে সিআইডি। এ নিয়ে প্রথমে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি বিজেপি বিধায়ক। রবিবার তিন রাজ্যে ভোটের ফলাফলে বিজেপির এগিয়ে থাকার খবর পেয়ে কর্মী এবং সমর্থকদের নিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতেন নীলাদ্রিশেখর। আবির খেলে কর্মীদের মিষ্টিমুখ করিয়ে জয় উদ্যাপন করেন। সেখানেই সিআইডির তলব নিয়ে মুখ খোলেন বিধায়ক। তিনি বলেন, “নীলাদ্রিশেখর দানা ক্রমশ বাঁকুড়ার মুখ হয়ে উঠছে। তাই মাত্র পাঁচ মিনিটের নোটিসে পাঁচশো মানুষ জড়ো হচ্ছেন। এই বিষয়টাই সহ্য হচ্ছে না তৃণমূলের।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের কোটি কোটি টাকা চুরি করেছে তৃণমূল। আমি এর আগে কাউন্সিলার ছিলাম। এখন বিধায়ক হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে বিজেপির পতাকা ছেড়ে রাজনীতি থেকে নির্বাসন নিয়ে নেব।’’ নীলাদ্রির অভিযোগ, শুধুমাত্র বিজেপি করেন বলেই তাঁকে বার বার হেনস্থা করা হচ্ছে।
তাঁর মেয়ের চাকরি-বিতর্কে বিধায়কের দাবি, ওই কাজ তাঁর মেয়ে পান ‘নো ওয়ার্ক নো পে’র ভিত্তিতে। চুক্তিভিত্তিক কাজ। বাবা হিসাবে প্রথমে তাঁর ইচ্ছাও ছিল না যে মেয়ে ওই কাজ করবেন। কিন্তু মেয়ে স্বাবলম্বী হতে চেয়ে ওই কাজে যোগ দেওয়ায় তিনি বাধা দিতে যাননি। বিধায়কের কথায়, ‘‘মেয়ের জন্য আমার গর্ব হয়। কোনও প্রভাব খাটিয়ে বা টাকা দিয়ে মেয়ে চাকরি পায়নি। সে নিজের যোগ্যতায় ‘নো ওয়ার্ক নো পে’-র ওই কাজ পেয়েছিল।’’
এ নিয়ে তৃণমূলের বক্তব্য, অভিযোগের তদন্ত চলছে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার দায়িত্ব বিধায়কেরই। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর যুক্তি, “প্রভাব খাটিয়ে মেয়েকে এমসে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পরই সিআইডি ঘটনার তদন্ত করছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের তো কোনও সম্পর্ক নেই। আর নীলাদ্রিশেখর দানা যদি নির্দোষ হয়ে থাকেন, তবে তাঁকেই তা প্রমাণ করতে হবে। বড় বড় কথা বলে কোনও লাভ নেই।’’