বিজেপি বিধায়ক নরহরি মাহাতোর বাড়িতে আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সুজিত মাহাতো sujit4abp2020@gmail.com
আগাম জানিয়েও তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর দেখা তাঁরা পেলেন না। অন্য দিকে, বিজেপি বিধায়ক নরহরি মাহাতো ঘটিতে জল নিয়ে আদিবাসী কুড়মি সমাজের বরিষ্ঠ সদস্যের পা ধুইয়ে তাঁকে বাড়িতে অভ্যর্থনা জানালেন।
১০-১১ জুন বান্দোয়ানে সংগঠনের রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরে ‘কুটুম কুটমারি ভাইআদি জিআউ হামদুমি’ নামে একটি কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। যার অর্থ, ‘তুমি যদি আমার আত্মীয় হও, তাহলে আমাদের প্রতি যাঁরা অগণতান্ত্রিক কথাবার্তা বলছেন, তুমি কি তাঁদের সঙ্গেই থাকবে?’ এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন দলের কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতাদের মতামত নিতে তাঁদের বাড়ি যাচ্ছেন সংগঠনের নেতারা।
শুক্রবার তাঁরা প্রাক্তন মন্ত্রী তথা রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শান্তিরাম মাহাতো ও জয়পুরের বিজেপি বিধায়ক নরহরি মাহাতোর বাড়িতে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। শান্তিরামের পুরুলিয়া শহরের রাঁচী রোডের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সংগঠনের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক সৈনিক স্কুল সংলগ্ন ময়দানে জড়ো হলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের বাইক মিছিল করতে বাধা দেয়। পরে তাঁরা কয়েক দফায় বাইক নিয়ে বেরোন।
যদিও তাঁরা পৌঁছনোর আগেই শান্তিরাম বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে যান। সংগঠনের মূল মানতা অজিত মাহাতো বলেন, ‘‘এ দিন তাঁর কাছে যাব বলে আগাম শান্তিরামবাবুকে জানিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, অসুস্থ। আমরা বলেছিলাম, কিছুক্ষণ কথা বলব। কিন্তু তিনি আগেই বেরিয়ে গিয়েছেন।’’ শান্তিরাম পরে বলেন, ‘‘জরুরি কাজে আমাকে কলকাতায় বেরিয়ে যেতে হয়েছে। তাঁদের সে কথা জানিয়েছি।’’
পরে মোটরবাইক মিছিল বিজেপি বিধায়ক নরহরির বাড়িতে পৌঁছয়। নরহরি নিজে নরেশ মাহাতো নামে সংগঠনের এক বরিষ্ঠ সদস্যের পা ধুয়ে ঘরে অভ্যর্থনা করেন বিধায়কের বাড়িতে সে সময় বিজেপির কুড়মি সম্প্রদায়ের কয়েক নেতাও ছিলেন। ভর দুপুরে বাড়িতে আসা কয়েকশো মানুষকে গুড়ের লাড্ডু ও জল খাওয়ান তিনি। পরে অজিত বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ যেখানে আমাদের সম্পর্কে অগণতান্ত্রিক কথাবার্তা বলেছেন, সেখানে সেই দলেরই আমাদের সমাজের একজন জনপ্রতিনিধি সামাজিক রীতি মেনে বরিষ্ঠ এক সদস্যের পা ধুইয়ে অভ্যর্থনা করেছেন, তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।’’
অজিত-সহ সংগঠনের নেতৃত্ব তাঁদের আন্দোলন নিয়ে নরহরির অবস্থান জানতে চান।
নরহরি তাঁদের জানান, বিধানসভায় বিজেপির দু’জন কুড়মি বিধায়ক আছেন। তাছাড়া বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কিছুদিন আগে বাঁকুড়াতেই বলেছেন এই আন্দোলনের প্রতি তাঁর নৈতিক সমর্থন রয়েছে। তাছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারও রাজ্যের কাছে প্রস্তাবের সমর্থনে ফারদার কমেন্ট জাস্টিফিকেশন চেয়েছে।