বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার বিকেলে বেলপাহাড়ির সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজ-সহ রাজ্যের নানা প্রকল্পে অর্থসাহায্য না করার অভিযোগ তুলেছিলেন। কয়েক ঘণ্টা পর বাঁকুড়ার রাইপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনি বলছেন, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। তা হলে এত দিন আপনার দলের ভাইয়েরা কেন বলে বেড়াচ্ছিল শিশু সাথী সহ অন্যান্য প্রকল্প রাজ্যের।’’
রাইপুরের জনজাতি গৌরব দিবস মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে ছুটি দিয়েছি। জঙ্গলমহল ছুটি চায়না, চাকরি চায়। আজকের মুখ্যমন্ত্রীকে জঙ্গলমহলের রাস্তা আমি দেখিয়েছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলের রাস্তা জানতেন না। লালগড়ে একটা সভা করা যায় কি না ২০১০ সালে জিজ্ঞাসা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি সেই সভা করে দেখিয়ে দিয়েছিলাম। জঙ্গলমহলের মানুষকে নিয়ে লড়াই আমি করেছিলাম। তার সুফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছেন। সে সময় ভাইপো ছিল ‘সেফ প্যাসেজে’।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে আপনাকে যেমন হারিয়েছি তেমনই আগামী দিনে এখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়ার শপথ নিয়ে যাচ্ছি। জঙ্গলমহলের মানুষ বঞ্চিত ও নিপীড়িত। দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকা কয়েক জন নেতা কয়লা, বালি চুরি করে, গরু পাচার করে টাকা লুঠে যাবে তা আমরা হতে দেব না । তৃণমূল নেতাদের দরজা খুললেই কোটি কোটি টাকা বার হচ্ছে। ভগবান বিরসাকে সাক্ষী রেখে আরও এক বার উলগুলান দরকার আছে।’’
মঙ্গলবার, জঙ্গলমহলের সভা থেকে আদিবাসীদের পাশাপাশি মতুয়া, রাজবংশী-সহ সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘দ্রৌপদী মুর্মুর চোখের অপারেশান হয় সেনার হাসপাতালে। আর ভাইপোর চোখের চিকিৎসা হয় আমেরিকায়। মাসে আপনি ৫০০ টাকা ও চাল ছুড়ে দেবেন, এটা কেউ মানবে না। লাল মাটি, বালু মাটি, উত্তরবঙ্গ সব অঞ্চলে গ্রামকে জাগাতে হবে। মতুয়া, রাজবংশী, জঙ্গলমহলের আদিবাসী মূলবাসী সকলে মিলে কালীঘাটের শাসন থেকে রাজ্যকে বাঁচানোই হবে বিরসা মুন্ডার প্রতি প্রকৃত সম্মান,’’
প্রসঙ্গত, বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার বাঁকুড়ার রাইপুরে জনজাতি গৌরব দিবস পালনের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। সেই কর্মসূচিরই অঙ্গ হিসাবে রাইপুরের থানাগোড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল শুরু করে বিজেপি। মাঝপথে সেই মিছিলে যোগ দেন শুভেন্দু। মিছিল শেষে রাইপুর ট্যাক্সি স্ট্যান্ড মোড়ে সভা করে বিজেপি। মিছিলের যাত্রাপথে দু’টি পৃথক জায়গায় থাকা পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু ও সিধো-কানুর মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু। সভা শুরুর আগে মঞ্চে রাখা বিরসা মুন্ডার ছবিতেও মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।