Siliguri Water Crisis

আবার জলসঙ্কটের পথে শিলিগুড়ি! বৃহস্পতিবার থেকে এক বেলা জল বন্ধ, ঘোষণা পুরসভার

শিলিগুড়ি পুরনিগমের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২৬ ডিসেম্বর থেকে কয়েক দিন শহরে জল সরবরাহ বিঘ্নিত হবে। এক বেলা জল আসবে না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৩৯
Share:

শিলিগুড়িতে বৃহস্পতিবার থেকে জলসঙ্কটের আশঙ্কা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

আবার জলসঙ্কটের পথে শিলিগুড়ি! বৃহস্পতিবার থেকে শহরে এক বেলা জলের জোগান বন্ধ থাকবে, ঘোষণা করল পুরনিগম। ফুলবাড়ি জল সংশোধনাগারে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে আবার জলসঙ্কটের আশঙ্কায় শহরবাসী। মহার্ঘ হতে পারে পানীয় জলও।

Advertisement

সম্প্রতি শিলিগুড়ি পুরনিগমের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘জল পরিশোধন কেন্দ্রের একটি ইউনিটের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে ২৬ ডিসেম্বর থেকে কয়েক দিন শহরে জল সরবরাহ আংশিক ভাবে বিঘ্নিত হবে। সকালে জল সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বিকেলে তা বন্ধ থাকবে।’’ সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখপ্রকাশও করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

পুরনিগম সূত্রের খবর, ফুলবাড়ি জল সংশোধনাগারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে পলি জমে জমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে যন্ত্রাংশ। তা পরিষ্কার করতে কিছু দিন সময় লাগবে। এই সময়টুকু এক বেলা করে জল সরবরাহ করা হবে শিলিগুড়ি পুরনিগম এলাকায়। শুধু সকালেই জল পাবেন বাসিন্দারা। কবে থেকে শহরে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, বিজ্ঞপ্তিতে তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। তবে পুরনিগমের সঙ্গে যুক্ত কেউ কেউ বলছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পাঁচ থেকে ছ’দিন লাগতে পারে।

Advertisement

শিলিগুড়ি পুরনিগমের জল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি। —নিজস্ব চিত্র।

পুরনিগমের এই ঘোষণায় অসন্তুষ্ট শহরবাসী। বার বার কেন জলের সমস্যা হচ্ছে, কেন জল সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। সাধারণত, শিলিগুড়ি শহর এলাকায় দিনে দু’বার করে জল সরবরাহ করে পুরনিগম। সকালে এবং বিকেলে জল আসে। মঙ্গলবারের বিজ্ঞপ্তির পর কেউ কেউ পুরনিগমের উপর ‘আস্থা’ রাখতেও পারছেন না। তাঁদের আশঙ্কা, দু’বেলাই জল বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে পানীয় জলের জন্য বাজারের বোতলজাত জল ছাড়া উপায় থাকবে না। অতীতেও এই পরিস্থিতি একাধিক বার তৈরি হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

পুরনিগমের ঘোষণা শুনে শিলিগুড়ির টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা লতা সাহা বলেন, ‘‘ওদের এক-একটা অজুহাত লেগেই থাকে। কিছু না কিছু বলে জল বন্ধ করে দেয়। ওরা বোঝে না যে, আমাদের জল কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নেই।’’ ভানুনগরের বাসিন্দা মণীশ কুমার বলেন, ‘‘এই বোর্ড আসার পর থেকে শহরে জলের সমস্যা লেগেই রয়েছে। মাঝেমধ্যেই জল বন্ধ করে দেয়। বলে পাঁচ দিন লাগবে, অথচ লাগিয়ে দেয় এক মাস! এ ভাবে আর কত দিন চলবে, জানা নেই। এর একটা স্থায়ী সমাধান ভীষণ প্রয়োজন।’’

শিলিগুড়িতে জল বন্ধ হলে বাজারে চড়া দামে জল বিক্রি হয়েছে এর আগেও। অনেকেরই সেই জল কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। বেশির ভাগ মানুষই পুরনিগমের জলের উপর নির্ভর করে থাকেন। ফলে তাঁরা নতুন করে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।

শিলিগুড়ি পুরনিগমের জল বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত স্থানীয়দের সমস্যার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বামেদের আমল থেকে পলিমাটি পরিষ্কার করা হয়নি। প্রায় এক যুগ হয়ে গেল, পলি জমছে। তা পরিষ্কার না করলে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আপাতত পাঁচ দিন এক বেলা করে জল দেওয়া হবে। এর জন্য আমরা শহরবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement