সৌমিত্র খাঁ। — ফাইল চিত্র
পৃথক রাজ্যের দাবিতে একাধিক বার সরব হয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের জনাকয়েক বিজেপি নেতা। এ বার রাঢ়বঙ্গ এবং জঙ্গলমহল নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি তুললেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। যদিও সৌমিত্রের দাবিকে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতারা।সৌমিত্রের দাবি, রাঢ় বাংলা বঞ্চিত। তিনি সোমবার বলেন, ‘‘রাঢ় বাংলা এবং জঙ্গলমহলকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কলকাতার বাবুরা নেতা কেনাবেচা করবেন। কিন্তু আলাদা বঙ্গ হলে ক্ষতি কী আছে? পশ্চিমবাংলায় থেকে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন হচ্ছে না। আমাদের নদী, আমাদের বীরভূমের সম্পত্তি, আমাদের জঙ্গলমহলের সম্পত্তি। আপনাদের সঙ্গে আমরা পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসাবে নিশ্চয় থাকব। কিন্তু রাঢ়ভূমের উন্নয়নের জন্য কী পাচ্ছি? বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, আসানসোল এই জায়গাগুলোকে কলকাতার বাবুদের কাছে রাখার কোনও মানে হয় না। এই জেলাগুলোকে নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করলে খুব ভাল হয়। উত্তরবঙ্গ যেমন ভাবতে শুরু করেছে। তেমনই জঙ্গলমহল রাজ্য আমরা কেন চাইব না? কারণ আমরা নেতা কেনাবেচা দেখছি। দামোদরের চরের বালি দিয়ে নেতাবাবুদের বাড়ি তৈরি হবে আর আমার নদীর চরের মানুষরা খেতে পাবে না?’’
সৌমিত্রর অভিযোগ, ‘‘গ্রামবাংলায় যুবকরা চাকরি পাচ্ছেন না। নদীর চরের বালি গরিব মানুষ ব্যবহার করতে পারছেন না। সেটা ব্যবহার করছে কলকাতা। বীরভূমের কয়লাখাদানের অর্থ তুলে নিয়ে যাবে কলকাতা। গ্রামবাংলার কোনও কাজ হচ্ছে না। রাঢ় বাংলার সম্পত্তি নিয়ে কলকাতা চলছে। তা হলে আমরা রাঢ় বাংলা বা জঙ্গলমহল দাবি করতে পারি না কেন? এটা যুক্তিযুক্ত আজকালকার দিনে। কারণ আমরা বাঁচতে চাই।’’ সৌমিত্রর আরও যুক্তি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ৪৬টি জেলা করতে পারেন, তা হলে আমিও জঙ্গলমহলকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিতে কেন্দ্রের কাছে দরবার করব।’’
সৌমিত্রের দাবি নিয়ে তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘এটা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। বিজেপি রাজ্য ভাগ করার পক্ষে। বিজেপি এ রাজ্যকে ভাগ করার চক্রান্ত বহু দিন ধরেই করছে। জঙ্গলমহলের মানুষ চান না রাজ্য ভাগ হোক। রাজ্য সরকারও চায় না রাজ্য ভাগ হোক। আসলে বিজেপিই এই কথা বলাচ্ছে।’’