অনুপম হাজরা। নিজস্ব চিত্র
ক’দিন আগেই তাঁর তৃণমূলে যোগদান নিয়ে জল্পনা চলছিল। এ বার বামেদের সমর্থনে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে ফের চর্চায় পদচ্যুত বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। তবে অনুপমের মন্তব্যকে একযোগে বিঁধেছে বাম-বিজেপি দু’পক্ষই।
রবিবার সিপিএমের যুব সংগঠনের ডাকা ব্রিগেডে জনসমাগমের পরই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন অনুপম। ব্রিগেডে ভিড়ের একটি ছবি দিয়ে লেখেন, ‘‘“না ক্ষমতায় কেন্দ্রে, না ক্ষমতায় রাজ্যে….শেষ কবে ক্ষমতায় ছিল, তাও হয়তো অনেকে ভুলে গেছে…না ছিল প্রধানমন্ত্রীর ছবি, না ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ছবি, তবুও দেখি প্রচারের চাকচিক্য, তাম-ঝাম ছাড়াই – লোকসভা নির্বাচনের মাত্র দু’মাস আগে ব্রিগেড “লালে লাল।”
বাম যুব সংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশের প্রশংসার পাশাপাশি নাম না করে নিজের দল বিজেপিকেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘“আমাদের চারিদিকে “ভূত কমিটির ঘনঘটা। ভেড়ার পালের মত আচরণ না করে, উপরওয়ালার দেওয়া যেটুকু ব্রেন আছে, সেটা দিয়ে অন্তত কখনও একবার সূক্ষ্মভাবে ভাবার চেষ্টা করুন… কিন্তু সমস্যা হল জেগে ঘুমানো মানুষকে কখনও জাগানো যায় না।”
এই পোস্টের পরে যে তাঁর বাম জলে যোগ দেওয়া নিয়ে চর্চা হবে তা আন্দাজ করেই অনুপম সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘এত দিন জল্পনা ছিল অনুপম হাজরা প্রায় তৃণমূলে যোগ দিয়ে ফেলেছেন। আজকের পর থেকে নতুন ভবিষ্যৎবাণী হবে হয়তো অনুপম হাজরা কয়েকদিনের মধ্যেই সিপিএমে যোগ দিতে চলেছেন। আমার অবস্থান কী হবে তা সময় বলবে।’’
বস্তুত, ক’দিন আগেই অনুপমের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়। দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগার পর বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকের পদ যায় অনুপমের। তার পরে তৃণমূল নেতা, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের মুখে শোনা যায়, ‘‘অনুপম হাজরা ভাল ছেলে, শিক্ষিত ছেলে। তিনি আমাদের দলে ফিরতে চাইলে স্বাগত।’’ অনুপম নিজেও কাজলের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা অস্বীকার করেননি। তিনি দাবি করেন, ‘‘কাজলের সঙ্গে আমার সুসম্পর্কের কথা মোদীজী, নাড্ডাজীর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানেন।’’ এ বার অনুপমের মুখে বামের প্রশংসা শোনা যাওয়ায় ফের চর্চায় তিনি।
তবে প্রচারে থাকতে চেয়েই যে অনুপম সমাজমাধ্যমে এ সব পোস্ট করছেন তা বলে তাঁর সমালোচনা করেছে বাম-বিজেপি দু’পক্ষই। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘অনুপম হাজরা যে দু’টি দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বা আছেন তাদের সঙ্গে আমাদের মতাদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। তাই তাঁকে দলে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি শ্যামপদ মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘উনি এখন আমাদের দলে কোন অবস্থানে আছেন জানি না। আর কেনই বা ওই সব লিখছেন তাও বলতে পারব না।’’