বসেছে নেমপ্লেট। নিজস্ব চিত্র।
শীর্ষ বিজেপি নেতা তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, সকলেই একমত। নির্বাচনে জিততে হলে দলের বুথ স্তরের সংগঠন মজবুত হওয়া জরুরি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে শাসক-বিরোধী, সব রাজনৈতিক দলের লক্ষ্যই তাই।
জেলা জুড়ে বুথ সভাপতিদের সম্মানীত করা ও স্বীকৃতি দেওয়ার মধ্যে দিয়েই শুক্রবার থেকে সেই লক্ষ্যেই কাজ শুরু করল বিজেপি। এ দিন থেকেই বীরভূমের প্রত্যেক বুথ সভাপতির বাড়িতে নেমপ্লেট লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে দলীয় তরফে। এই কর্মসূচি চলবে রবিবার পর্যন্ত। লক্ষ্য, জেলার ৩০২১টি বুথেই নিজেদের প্রতিনিধিত্বের জানান দেওয়া।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রয়াত ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন পালনকে সামনে রেখে ‘আমার বুথ সবচেয়ে মজবুত’ কর্মসূচি শুরু করেছে বিজেপি। তার অঙ্গ হিসাবেই দলের প্রত্যেক বুথ সভাপতিকে সম্মানীত করেছে দল। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে একটি করে কিট। ওই কিটে বেশ কিছু মাস্ক, স্যানিটাইজার, বই, প্রয়োজনীয় নথিপত্র, দলের প্রচারপত্রের সঙ্গে ছিল নেমপ্লেটও। যা প্রত্যেকের বাড়িতে লাগানো হবে। দলের পদাধিকারী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় বুথ সভাপতিকে পরিচিত করানোর এই ভাবনায় সুচতুর কৌশল লুকিয়ে ।
শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে দুবরাজপুর শহরের মোট ৩১ জন বুথ সভাপতির মধ্যে ২৮ জনকে সংবর্ধিত করে নেমপ্লেট বাসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে জেলা বিজেপি। এ কথা জানিয়েছেন দলের শহর সভাপতি সন্দীপ আগরওয়াল। একই ছবি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এ দিনই দুবরাজপুরের বালিজুড়ি, লোবা, লক্ষ্মীনারায়ণপুর হেতমপুর, পারুলিয়া পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট ৮৭ জন বুথ সভাপতিকে একই ভাবে সম্মানীত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মণ্ডল সভাপতি সাধন ধীবর।
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের কথায়, ‘‘সবার আগে প্রয়োজন বুথকে শক্তিশালী করা। যিনি দলের তরফে বুথের দায়িত্বে, তাঁকে স্বীকৃতি ও সম্মান দিয়ে এটা বোঝানোর চেষ্টা যে, তিনি দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সৈনিক।’’
কথাটা যে খুব ভুল বলছেন জেলা সভাপতি, তা বুথ সভাপতিদের প্রতিক্রিয়া থেকেই স্পষ্ট। দলের তরফে এমন সম্মান পেয়ে খুশি দুবরাজপুরে বিজেপির দুই বুথ সভাপতি বাসুদেহ দত্ত, শিবা বাদ্যকর। তাঁরা বলছেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর ধরে দল করছি। সেটা ভাল লাগা থেকেই। সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, দলের আদর্শ অনুযায়ী পথ চলতে। আজ যে সম্মান পেলামন তাতে গর্বিত। কাজের উৎসাহ আরও বাড়ল।’’ হেতমপুর পঞ্চায়েত এলাকার এক বুথ সভাপতি লল্টু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দলের নিচু তলার এক জন কর্মীকে এমন গুরুত্ব দেওয়া দেখে দলের প্রতি শ্রদ্ধা কয়েকগুণ বেড়ে গেল।’’
বিজেপি নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, এ বার দলীয় কর্মীদের ধরে রেখে সংগঠন মজবুত করা থেকে বাড়িতে বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ শোনানো, জনসংযোগ বাড়ানোর দায়িত্ব পালন করবেন বুথ সভাপতিরাই।