শুধু ফোনে-ফোনে দলের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চাইছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। তাই, মোবাইলে ‘মিস্ড কল’ দিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করলেই হবে না। তাঁকে দলের তৈরি একটি আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। সংবাদমাধ্যমকে ডেকে বুধবার এ কথা জানালেন বিজেপি-র বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল।
নতুন সদস্যদের কিংবা অন্য দল থেকে (বিশেষ করে তৃণমূল) আসা নেতা-কর্মীদের দলে নেওয়া নিয়ে বিজেপি-তেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিজেপি-র পুরনো নেতা-কর্মীরা। বীরভূমও তার ব্যতিক্রম নয়। ফলে, নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির জন্য দল কোথাও একটা ছাঁকনি চাইছে বলেই এ দিন বিজেপি-র জেলা সভাপতির ঘোষণায় মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
নির্বাচনে দারুণ ফল করার পরেই এ রাজ্যে নতুন সদস্য বাড়ানোয় জোর দিয়েছেন বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন, ৬ জুলাই থেকে সেই বিশেষ অভিযানে নেমেছে বিজেপি।
দল সূত্রের খবর, দেশ জুড়ে ১১ কোটি সদস্যের সঙ্গে আরও ২০ শতাংশ নতুন লোককে দলে শামিল করা হবে। এ ব্যাপারে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের উপরেই আস্থা রাখছে দল। এ বার রাজ্যের সঙ্কেত পেয়ে জেলা বিজেপিও কাজে লেগে পড়েছে। শুধু বীরভূম থেকেই কয়েক লক্ষ নতুন সদস্য সংগ্রহ করার লক্ষ্য রয়েছে বলে জানান শ্যামাপদ।
তবে আগে শুধু ‘মিস্ড কল’ দিয়েই যে কেউ সদস্য হতে পারতেন। সেই পদ্ধতিতেই এ বার বদল আসছে। ফর্ম পূরণ করলে তবেই মিলবে দলে ঢোকার ছাড়পত্র। বিজেপি-র জেলা নেতারা বলছেন, এর পিছনে একাধিক কারণ আছে। ‘মিস্ড কল’ দিয়ে সদস্য হলেও তিনি কোন অঞ্চলের লোক, সেটাই পরে খুঁজে পাওয়া যায় না। গতবার এই নিয়ে ভুগতে হয়েছে। রাজ্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। এ বার তা যাতে না হয়, তার জন্য আরও বেশি সতর্ক দল। কারণ অনেকের মোবাইল নম্বর বদলে যায়। ফলে, দলের নির্দেশ ‘মিস্ড কল’ এলেই সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে দলের সব মোর্চার পক্ষ থেকে। তা ছাড়া, ফর্ম পূরণ করা মানে, সেই ব্যক্তি ঠিক কী ভেবে দলে আসছেন, তার একটা আগাম যাচাইপর্ব হয়ে যাওয়া। একটা নথিও দলের হাতে
থাকবে। স্রেফ ‘মিস্ড কল’ দিয়ে বিজেপির সদস্য হলেই যে তাঁর কাজ শেষ হচ্ছে না, সেটা নতুন সদস্যকে বোঝানো হবে।
শ্যামাপদ বলেন, ‘‘ফর্মগুলি দলের তরফে দ্রুত জেলায় পৌঁছে যাচ্ছে। ফোন আসার পরেই নম্বর ধরে বাড়ি গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করিয়ে করিয়ে নেওয়া হবে।’’ তবে, প্রশ্ন হল, বাড়ি বাড়ি ফর্ম নিয়ে যাওয়ার মতো কর্মী সংখ্যা দলের কাছে আছে কি। জেলা বিজেপি নেতাদের দাবি, এখন তাঁদের দলের সংগঠন অনেক বেড়েছে। আগের চেয়ে কর্মী সংখ্যাও কয়েক গুণ বেশি। ফলে, খুব সমস্যা হবে না।
তবে এখানেই শেষ নয়। এর পরের পর্ব ফের বিস্তারকদের নামিয়ে দলের আদর্শ, কর্মকাণ্ড প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে প্রচার করার পরিকল্পনাও নিয়েছে বিজেপি। সে জন্য দু’দফায় ২৩ তারিখ থেকে বিস্তারকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি।