TMC

মিলল জল্পনা, পালাবদলে তৃণমূলের হাতে লোকপুর

প্রসঙ্গত লোকসভা নির্বাচনের পরই বিজেপি পরিচালিত সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েতের দুই সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লোকপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০৬:১৫
Share:

দলবদল। রবিবার খয়রাশোলে তৃণমূল কার্যালয়ে। — নিজস্ব চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই খয়রাশোল ব্লকের বিজেপি পরিচালিত লোকপুর পঞ্চায়েতের পালাবদল হতে পারে বলে জল্পনা চলছিল। তাই সত্যি হল রবিবার।

Advertisement

এ দিন বিকেলে পৌনে তিনটে নাগাদ ওই পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির রূপা গোপ এবং বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য মৌসুমী ধীবর তৃণমূলে যোগ দিলেন। খয়রাশোলের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয় খয়রাশোল তৃণমূলের কোর কমিটির পক্ষ থেকে। উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক মৃণালকান্তি ঘোষ, শ্যামল গায়েন, সদস্য কাঞ্চন দে ও উজ্জ্বল হক কাদেরী। ছিলেন যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবব্রত সাহা এবং ব্লক কমিটির অন্য সদস্যরা।

দুই বিজেপি সদস্যে দল বদলের ফলে তৃণমূলের হাতেই ওই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা গেল। দেবব্রত বলেন, ‘‘এক জনই নেত্রী। তাঁর উন্নয়ন যজ্ঞে শামিল হতে বিজেপি ছেড়ে ওঁরা তৃণমূলে এলেন।’’ তৃণমূলের যোগ দিয়ে প্রধান রূপা বলেন, ‘‘বিজেপিতে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না। উন্নয়নের স্বার্থেই দলবদল।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত লোকসভা নির্বাচনের পরই বিজেপি পরিচালিত সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েতের দুই সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সংখ্যাতত্বের বিচারে কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের তৃণমূল এগিয়ে। কিন্তু প্রধান দল বদল করেননি। পঞ্চায়েতে যে কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে শেষ কথা প্রধানই এবং পদে বসার আড়াই বছরের পরে প্রধান বদল সম্ভব। তাই শাসকদলের কাছে সংখ্যা থাকলেও ক্ষমতা নেই। তবে লোকপুরের ক্ষেত্রে প্রকৃত ক্ষমতাই দখল করল শাসকদল।

প্রসঙ্গত গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লকের একমাত্র লোকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। মোট ১৪টি আসনের মধ্যে আটটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। বাকি ছ’টি আসনের চারটিতে তৃণমূল জয়ী হলেও বাকি দু’টি আসনে জয়ী হয় নির্দল প্রার্থী টুকুরানি মণ্ডল এবং টুম্পা চৌধুরী। সূত্রের খবর, শাসকদলের টিকিট না পেয়েই নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁরা। পরে ‘মান অভিমানের পালা’ কাটিয়ে নির্দল দুই মহিলা সদস্য তৃণমূলে যোগ দিতে তৃণমূল ও বিজেপির আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল যথাক্রমে ছয় ও আট। সেটাই এ দিনের পরে বদলে যথাক্রমে দাঁড়াল আট এবং ছয়।

১৯ সালের লোকসভা, ২১ সালের বিধানসভা ও ২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই অঞ্চলে ধারাবাহিক ভাবে বিজেপি থেকে পিছিয়ে থেকেছে শাসকদল। পরিস্থিতি বদল ঘটে এ বারের লোকসভা নির্বাচনের পরে। লোকপুর পঞ্চায়েতে প্রায় ৬৫০টি ভোটে লিড পায় শাসকদল। তখন থেকে বিজেপির থেকে মাত্র দু’টি আসনে পিছিয়ে থাকা পঞ্চায়েতে পালাবদলের সম্ভবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। লোকসভার পরেই তৃণমূল দাবি করেছিল, চার জন বিজেপি সদস্যের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা এগোচ্ছে। যে কোনও দিন দলবদল করবেন তাঁরা।

এ কথা প্রচার হতেই আগল দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। দলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছেন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা। সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ সুবিধা, অসুবিধার কথা শুনেছিলেন বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক টুটুন নন্দীও। কিন্তু সেই চেষ্টা বিফলে গেল।

এ দিন অনুপের অভিযোগ, ‘‘টাকার লোভে প্রধান অন্য দলে গিয়ে দল ও এলাকার ভোটারদের ঠকিয়েছেন। কী উন্নতি করবেন জানা নেই। তবে এর জবাব সময়ে তিনি পাবেন।’’ সদ্য তৃণমূলের আসা প্রধান অবশ্য প্রলোভন বা চাপের কথা অস্বীকার করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement