সুফল বাংলার স্টল বন্ধ বিষ্ণুপুরে। নিজস্ব চিত্র।
বাজারে আলু, পেঁয়াজ, টোম্যাটো, বেগুন প্রভৃতির দাম নাগালের বাইরে। রাজ্য সরকার তাই সুফল বাংলার স্টল থেকে কম দামে আনাজপাতি কিনতে উৎসাহ দিচ্ছে। কিন্তু দু’জেলায় যে অল্প ক’টি জায়গায় সুফল বাংলার স্টল রয়েছে, তার মধ্যে দু’টি আবার বন্ধ। ফলে সাধারণ মানুষকে সেই বাজারেই চড়া দরে জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। যেখানে স্টল চালু রয়েছে, সেখানে আবার বাছাই করে কেনার সুযোগও নেই।
বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুরের বৈলাপাড়ায় উপবাজার চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, সুফল বাংলার তিনটি স্টল তিন দিন ধরে বন্ধ। বহু ক্রেতা এসে হতাশ হয়ে শেষে পাশের উপবাজার থেকে চড়া দরে অল্প আনাজ কিনে বাড়িমুখো হলেন। কেন বন্ধ? বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ ও বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামীর আশ্বাস, কেন বন্ধ খোঁজ নেবেন। দ্রুত চালু করার চেষ্টা করবেন।
মানবাজারের কিসানমান্ডিতে বছর দুয়েক আগে চালু হয়েছিল সুফল বাংলার স্টল। মাস চারেক চলার পরে বছর দেড়েক ধরে বন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দা চণ্ডীদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘‘সুফল বাংলার স্টলে নায্যমূল্যে আনাজপাতি পেতাম। কেন হঠাৎ বন্ধ হল বুঝতে পারছি না। প্রশাসনেরও কোনও হেলদোল নেই।’’ বিডিও (মানবাজার ১) দেবাশিস ধর বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব কেন বন্ধ।’’
অন্য দিকে, বাঁকুড়া শহরের নতুনচটির কিসানমান্ডিতে সুফল বাংলার স্টলে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ায় পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক লাইন করতে হচ্ছে। দোকানের কর্মীরা জানাচ্ছেন, স্টল খোলা হয় সকাল ৮টায় কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই ক্রেতারা লাইন দিচ্ছেন। স্টল খোলার সময় লাইনে কয়েকশো মানুষের ভিড় থাকছে।
ক্রেতারা জানাচ্ছেন, বাজারের থেকে সব জিনিসই এখানে কেজিতে ৫-১০ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে আলু-পেঁয়াজের দামে অনেকখানি ফারাক। সুফল বাংলার স্টলে এ দিন কেজি প্রতি জ্যোতি আলু ২৭ টাকা, পেঁয়াজ ৩৮ টাকা, পটল ২০ টাকা, বেগুন ও শসা ৪০ টাকা, উচ্ছে ৫০ টাকা, কুমড়ো ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। ক্রেতাদের মধ্যে অনিন্দিতা নন্দী, সুব্রত দত্ত, সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, “এখানে আনাজ বাছাই করে কিনতে পারছি না, এটা ঠিক। খোলা বাজারেও আজকাল ভাল মানের আলু খুঁজতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার চেয়ে এখানে কম দরে মাল কিনতে পারছি এটাই যথেষ্ট। তবে লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়াতে হচ্ছে।’’ যদিও বাঁকুড়ার সুফল বাংলা স্টল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা তাপস দাসের দাবি, গুণমান নিয়ে ক্রেতারা কোনও অভিযোগ করছেন না। গত কয়েক মাসে তাঁদের বিক্রি দ্বিগুণ বেড়েছে।
দিন দিন বিক্রিবাটা বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন পুরুলিয়ার সুফল বাংলার স্টলের ম্যানেজার সুব্রত সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রতিদিন ঝালদা স্টেশন বাজারে চাষিদের থেকে আনাজ কিনি।’’ কাছারি বাজারে সুফল বাংলার স্টলে অবশ্য এ দিন খুব বেশি ভিড় ছিল না। পুরুলিয়া শহরের নডিহার বাসিন্দা রাজেশ দাস বলেন, ‘‘কিছু আনাজ খুচরো বাজারে একই দামে মিললেও, কিছু কিছু আনাজ বেশ কম দামে মিলছে। এখানকার আনাজও টাটকা।’’ বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া জেলা পরিষদ চত্বরে বাজারের থেকে কম মূল্যে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। জেলা কৃষিজ বিপণন আধিকারিক দেবাঞ্জন পালিত জানান, ক্রেতাদের জন প্রতি ২৭ টাকা দরে তিন কেজি আলু এবং ৩৬ টাকা দরে ৫০০ গ্রাম করে
পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।