অনুব্রতের ফাঁকা চেয়ার ঘিরে আলোচনা তৃণমূল নেতৃত্বের। নিজস্ব চিত্র।
ঘরের দেওয়ালের রং গাঢ় সবুজ। তাতে ঝোলানো রয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। অন্য একটি ছবিতে পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী মমতা এবং জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। পাথর বিছানো মেঝের উপর পাতা চেয়ারে বসে জেলার তাবড় নেতারা। নেই শুধু অনুব্রত। বস্তুত, গত বৃহস্পতিবার কেষ্টর গ্রেফতারির পর এটাই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের প্রথম বৈঠক। রবিবাসরীয় সেই বৈঠকে দেখা গেল সামনের একটি চেয়ার ফাঁকা। জেলা সভাপতি যেখানে বসতেন, সেই চেয়ার ঘিরেই আলোচনা শুরু করলেন চন্দ্রনাথ সিংহ, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
অনুব্রত যে চেয়ারটিতে বসতেন, বাকিদের চেয়ে সেটা আলাদা। সামান্য উঁচু ওই চেয়ারে দুধসাদা তোয়ালে জড়ানো। সামনে টেবিলের উপর জলের বোতল, কিছু কাগজপত্র ছড়িয়ে আছে। তবে ‘কেষ্টদা’ যে চেয়ারে বসতেন, সেটায় কেউ বসেননি। বরং এমন ভাবে বাকিরা বসলেন, যেন অনুব্রত সেই চেয়ারেই বসে রয়েছেন।
গরুপাচার মামলায় অনুব্রতের গ্রেফতারির পর ‘দুশ্চিন্তা’য় জেলা তৃণমূল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন নেতা স্বীকারও করেন যে, কর্মীদের মনোবলে চিড়় দেখা দিয়েছে। তিন দশক ধরে জেলা তৃণমূলের রাশ ছিল অনুব্রতের হাতে। হঠাৎ তাঁর এ ভাবে অনুপস্থিতিতে ঝটকা তো একটা লাগবেই। রবিবারের বৈঠকও এই কারণেই। জেলা তৃণমূলের আগামী কর্মসূচি কী হবে, কেষ্টর অনুপস্থিতিতে জেলায় দলের পরিচালনা কেমন ভাবে হবে, সে সবের সিদ্ধান্ত হবে বৈঠকে। আলোচনায় ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। ছিলেন জেলার প্রায় সমস্ত তৃণমূল বিধায়ক। তবে বৈঠকে না থেকেও যেন বেশি করে তাঁর উপস্থিত জানান দিলেন অনুব্রত। সৌজন্যে ওই ফাঁকা চেয়ার।