বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
উপাচার্যের পদে মেয়াদ শেষ হতেই বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নোটিস পাঠিয়ে তলব করল শান্তিনিকেতন থানা। বিশ্বভারতীতে ফলক বসানো-সহ ছ’টি মামলায় প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎকে তলব করা হয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। ১৪ নভেম্বর থেকে তাঁকে বিভিন্ন তারিখে তলব করা হয়েছে বিদ্যুৎকে।
ফলক-বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে মেয়াদ শেষ হয়েছে বিদ্যুতের। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ম মেনে আপাতত উপাচার্য পদের দায়িত্ব সামলাবেন কলাভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয় মল্লিক। বিশ্বভারতীর সব ক’টি ভবনের অধ্যক্ষদের মধ্যে সঞ্জয়ই সবচেয়ে প্রবীণ বলে এই দায়িত্ব পেয়েছেন। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, এখন উপাচার্যের বাসভবনেই রয়েছেন বিদ্যুৎ। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সেখানে গিয়ে তাঁকে নোটিস দিয়ে এসেছেন শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ অফিসারেরা।
পাঁচ বছরের কার্যকালে বিতর্ক বরাবরই সঙ্গী ছিল বিদ্যুতের। মঙ্গলবারও তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি পাঁচ পাতার চিঠি দেন, যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি কার্যত মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করেছেন বলে আশ্রমিকদের একাংশ মনে করেন। বিদায়ের দিনেও পুলিশের কাছে তা নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে বিদ্যুতের নামে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে যে চিঠি লিখেছিলেন তিনি, সেটির ভাষা ‘অশালীন’ ও ‘কুরুচিসম্পন্ন’ বলে দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, ওই চিঠি ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে’ লেখা হয়েছে। আবার বিশ্বভারতী ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র হওয়ার পরে রবীন্দ্রনাথের নাম বাদ রেখে শুধু আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উপাচার্য হিসাবে নিজের নাম উৎকীর্ণ করা ফলক বসিয়েছিলেন শান্তিনিকেতনের একাধিক জায়গায়। সেই ফলক নিয়ে বিশ্বভারতীর রেক্টর তথা রাজ্যপাল থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী, এমনকি বিরোধী দলনেতার সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের অনিল কোনার। এ ছাড়াও বিদ্যুতের বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলা রয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।