(বাঁ দিকে) বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং (ডান দিকে) অমর্ত্য সেন। —ফাইল চিত্র।
অমর্ত্য সেন এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মধ্যে জমি বিবাদের এখনও মীমাংসা হয়নি। তা নিয়ে অর্থনীতিবিদকে লাগাতার আক্রমণও শানিয়ে চলেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেই বিবাদের আবহে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে আড়াই বিঘা জমি এবং সেই জমির উপর ৩২০০ বর্গফুটের বাড়ি দান করে দিলেন বৃদ্ধ এক দম্পতি। সেই জমি পাওয়ার পরেই নাম না করে আবার নোবেলজয়ী অমর্ত্যকে ‘নিচু মানসিকতা’র মানুষ বলে কটাক্ষ করলেন উপাচার্য। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে নিন্দার সরব হয়েছেন আশ্রমিক থেকে শুরু করে শিক্ষকদের একাংশ।
শান্তিনিকেতনের সীমান্তপল্লি এলাকার আড়াই বিঘা জমি আর ওই জমির উপর তৈরি বাড়ি বিশ্বভারতীর নামে করে দেন মালিক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী নীতা। এই দম্পতি এখন লন্ডনে থাকেন। সেখানেই থাকেন তাঁদের ছেলেমেয়েরা। এক সময় বিশ্বভারতীর পাঠভবনে পড়াশোনা করতে শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন অরবিন্দ। বৃহস্পতিবার জমি-বাড়ির কাগজপত্র বিদ্যুতের হাতে দেন দম্পতি। জানান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর এই প্রথম কেউ বিশ্বভারতীকে এই বিপুল সম্পত্তি দান করলেন। এই সম্পত্তি কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
এর পরেই নাম না করে অমর্ত্যকে নিশানা করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে এক বিখ্যাত ব্যক্তি সাড়ে ছ’কাঠা জায়গার জন্য গোটা বিশ্ব উত্তাল করে চলেছেন। তার জন্য কী কী হচ্ছে, সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এখনও এমন ব্যক্তি আছেন, যিনি বিশ্বভারতীকে এত বড় একটি সম্পত্তি নিঃস্বার্থ ভাবে দিয়ে দিলেন। এখানেই ছোট মানসিকতা ও বড় মানসিকতার প্রমাণ পাওয়া যায়।’’
উপাচার্যের এই মন্তব্যের সমালোচনা করছেন আশ্রমিকদের একাংশ। এক আশ্রমিক বলেন, “বিশ্বভারতীতে বহু উপাচার্য এসেছেন। কারও মুখে এ কথা শুনিনি। শুনে বড় খারাপ লাগছে।” অন্য এক আশ্রমিকের কথায়, ‘‘উনি (উপাচার্য) নিজেকে রাবীন্দ্রিক নন বলে গর্ব বোধ করেন, সেটা তাঁর ভাষা থেকেই আজ প্রমাণ হচ্ছে। এর ফলে সব দিক থেকে বিশ্বভারতীর মানও আজ দিন দিন নামছে।’’