ফাইল চিত্র
উনুনে ফুটছে ভাত। কাটা হচ্ছে তরকারি। পাশেই চলছে মাংস রান্নার আয়োজন। মিড-ডে মিল কেমন চলছে তা দেখতে গিয়ে সরকারি কর্তারা দেখলেন, স্কুল চত্বরে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের রান্না চলছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ অযোধ্যাপাহাড়ের বড়গোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে বিডিও (বাঘমুণ্ডি) উৎপল দাস মোহরী এমনই কাণ্ড দেখে তাজ্জব হয়ে যান। গত ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে বাঘমুণ্ডি গার্লস হাইস্কুলে মিড-ডে মিল পরিদর্শনে গিয়ে বিডিও দেখেছিলেন, সে দিন স্কুলে রান্নার হাঁড়িই চড়েনি। স্কুলে সে দিন অনেক কম শিক্ষিকা হাজির দেখে অবাক হয়েছিলেন তিনি।
স্কুলের মিড-ডে মিল কেমন চলছে তা নিয়মিত দেখতে যাচ্ছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কোথাও কোথাও পুলিশও যাচ্ছে। এ দিন ব্লক প্রশাসনেক কয়েকজনকে নিয়ে বড়গোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান বিডিও। প্রশাসন সূত্রের খবর, স্কুলে গিয়ে দেখেন ক্লাস হচ্ছে না। কিন্তু রান্নার রীতিমতো আয়োজন। স্কুলের এক শিক্ষক বিডিওকে জানান, তাঁরা দু’জন শিক্ষক আছেন। এক জন ছুটিতে। রান্নাবান্নার এই আয়োজন কীসের জন্য জানতে চাওয়ায় ওই শিক্ষক জানান, স্কুল চত্বরে একটি শ্রাদ্ধবাড়ির খাওয়াদাওয়ার রান্না চলছে। বিডিও ওই শিক্ষকের কাছে জানতে চান, তাহলে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল রান্না কি বন্ধ রয়েছে? শিক্ষক তাঁকে জানান, পড়ুয়ারা ওই ভোজ বাড়িতেই খাবে। যদিও পড়ুয়াদের সেখানে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ।
পরে বিডিও বলেন, ‘‘মিড-ডে মিল কেমন চলছে তা দেখতেই ঢুকেছিলাম। কিন্তু দেখি, শ্রাদ্ধবাড়ির রান্নাবান্না চলছে। প্রধান শিক্ষক জানালেন, পড়ুয়ারা বাইরে পড়াশোনা করছে। ভোজবাড়িতেই তারা খাবে। যদিও পড়ুয়াদের দেখতে পাইনি। পরে প্রধান শিক্ষক জানান, পড়ুয়ারা স্নান করতে গিয়েছে। এমনকি, রেজিস্ট্রারে পড়ুয়াদের হাজিরাও তিনি দেখাতে পারেননি।’’ তিনি জানান, পুরো বিষয়টি নিয়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে থেকে রিপোর্ট চেয়েছেন। বাঘমুণ্ডির অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অভিষেক পাল বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে এই মর্মে রিপোর্ট চাইব।’’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক হীরালাল সিং সর্দার দাবি করেন, ‘‘মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ৩৭। তার মধ্যে এ দিন প্রায় ২৬ জনের হাজির ছিল। এ দিন পড়াশোনা হয়েছে। তবে পরিদর্শনের সময়ে তারা স্নান করতে গিয়েছিল।’’ স্কুল চত্বরে কেন শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হল? প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘গ্রামবাসী যদি অনুষ্ঠান করতে চান, আমি কী ভাবে বাধা দেব?