বাঁকুড়া মেডিক্যালে নতুন যন্ত্রের সূচনা, শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
অত্যাধুনিক ‘অপটিক্যাল কোয়ারেন্স টোমোগ্রাফি’ বা ‘ওসিটি’ নিয়ন্ত্রিত অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি শুরু হল বাঁকুড়া মেডিক্যালে। এর ফলে হৃদযন্ত্রে আরও নিখুঁত ভাবে মাইক্রোসার্জারি সম্ভব বলে দাবি চিকিৎসকদের। বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে কেবল এসএসকেএমে ওসিটি মেশিন রয়েছে। এ বার থেকে বাঁকুড়াতেও ওই মেশিন দিয়ে হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার করা শুরু হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে ওই যন্ত্রে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির খরচ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। বাঁকুড়া মেডিক্যালে বিনামূল্যেই সেই পরিষেবা মিলবে।”
সম্প্রতি বছর বাষট্টির এক বৃদ্ধ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি হন। ওই বৃদ্ধের হৃদযন্ত্রে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। শুক্রবার ওই যন্ত্র দিয়ে সফল ভাবে তাঁর হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক সৌমিত্র দে জানান, ওই অত্যাধুনিক যন্ত্রে হৃদযন্ত্রের নিখুঁত ছবি ফুটে ওঠে। হৃদযন্ত্রের ধমনী কতটা মোটা, সেখানে ক্যালসিয়াম রয়েছে কি না, জমাট বাঁধা রক্তের চরিত্র কেমন, কোন আকারের তারজালি বা ‘ক্যাথিটার’ রোগীর হৃদযন্ত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে, এ সব নিখুঁত ভাবে জানান দেয় যন্ত্রটি। এমনকি, অস্ত্রোপচার ঠিক ভাবে হচ্ছে কি না, তা-ও জানা যায় ওই যন্ত্রের সাহায্যে। তিনি বলেন, “অত্যাধুনিক এই যন্ত্রের সাহায্যে অস্ত্রোপচার অনেকটাই নির্ভুল হয়। পুরনো পদ্ধতিতে হৃদযন্ত্রের ছবি দেখে অভিজ্ঞতার উপরে নির্ভর করে কাজ করতে হত চিকিৎসকদের। তাতে অনেক সময়ে রোগীদের পরবর্তী কালে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হত। এ ক্ষেত্রে তা এড়ানো যাবে।”
হাসপাতাল সূত্রে খবর, যন্ত্রটি পরিচালনার জন্য চিকিৎসকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। গত মার্চ থেকে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি চালু হয়েছে বাঁকুড়া মেডিক্যালে। প্রতি মাসে ১০-১৫টি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হচ্ছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রটি চালু হওয়ায় রোগীরা আরও উন্নত মানের পরিষেবা পাবেন, দাবি মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের।