ধৃতদের তোলা হচ্ছে আদালতে। —নিজস্ব চিত্র
শুধু মৌখিক কথাবার্তা নয়। দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে চুক্তিপত্রে সই করে লেনদেন হয়েছিল তিন শিশুর। বাঁকুড়ার শিশুপাচার-কাণ্ডের তদন্তে নেমে তেমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সিআইডি-র হাতে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই চুক্তিপত্রেই লুকিয়ে রয়েছে শিশুপাচার-কাণ্ডে নানা তথ্য। এ হেন চুক্তিপত্রের কথা জানার পর তা উদ্ধার করার চেষ্টায় নেমেছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের ধারণা, চুক্তিপত্রটি রয়েছে শিশুপাচার-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুষমা শর্মার স্বামী সতীশ ঠাকুরের কাছে। তাই পাঁচ দিনের সিআইডি হেফাজত শেষে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে ফের দু’দিনের জন্য সতীশকে নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন করে সিআইডি। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। অধ্যক্ষ কমলকুমার রাজোরিয়া-সহ অন্য দুই মূল অভিযুক্তকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দুর্গাপুরের মেন গেট এলাকার বাসিন্দা রিয়া বাদ্যকর নিজের পাঁচ শিশু সন্তানের তিনটি বিক্রি করেছিলেন কমলকুমার এবং স্কুলেরই আর এক নিঃসন্তান শিক্ষিকা সুষমাকে। ঠিক কত টাকায় ওই তিন শিশু সন্তানকে বিক্রি করা হয়েছিল তা জানতে না পারেননি তদন্তকারীরা। তবে রিয়ার থেকে প্রায় এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। সম্প্রতি অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, শিশুদের লেনদেনের ক্ষেত্রে দু’পক্ষের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি হয়েছিল। গোয়েন্দাদের একাংশের ধারণা, চুক্তিপত্রটি রয়েছে শিক্ষিকা সুষমা স্বামী সতীশের কাছে। গোয়েন্দাদের মতে, এই চুক্তিপত্র উদ্ধার হলে তিন শিশু বিক্রির বিনিময়ে তাদের মা রিয়া কত টাকা পেয়েছিলেন সে ব্যাপারে অনেক অজানা তথ্য উঠে আসবে। সিআইডি-র তদন্তকারী দল সতীশ ঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর দুর্গাপুরের বাড়িতেও হানা দিতে পারে বলে সূত্রের খবর।