Coronavirus in West Bengal

উপসর্গহীন রোগীরা এ বার থেকে আলাদা

পরিকল্পনা হল, উপসর্গহীন কোভিড পজেটিভ রোগীদের হাসপাতালে নয়, বরং পৃথক ভাবে লোকালয় থেকে দূরে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখার।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০৩:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, ইতিমধ্যেই একশো ছাড়িয়েছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। যে ভাবে প্রতিদিন সংখ্যাটা বাড়ছে তাতে সংক্রমণ কোথায় গিয়ে থামবে, কেউ জানে না। এত সংখ্যক আক্রান্তের চিকিৎসা কী ভাবে হবে, সেটাও বিরাট বড় প্রশ্ন। এমন আবহে সংক্রমণের বহর ঠেকাতে মধ্যবর্তী পথ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করল প্রশাসন।

Advertisement

পরিকল্পনা হল, উপসর্গহীন কোভিড পজেটিভ রোগীদের হাসপাতালে নয়, বরং পৃথক ভাবে লোকালয় থেকে দূরে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখার। যাতে উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীরা সীমিত সংখ্যক বেড সম্বলিত কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ পান। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ শুরু হয়েছে। লালারসের রিপোর্ট দেরিতে পাওয়ার আগে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকতে থাকতেই যদি উপসর্গ দেখা দেয়, তাঁদের পৃথক করার ভাবনাও নেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক দিনে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন বা শ্রমিকের বাড়ি ফেরায় করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে বেড়ে গিয়েছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত যে সব রোগীর দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে, তাঁরা প্রায় সকলেই শ্রমিক। আগামী কয়েক দিনে অন্তত দশ-বারো হাজার শ্রমিক জেলায় আসবেন ধরে তৎপরতা বেড়েছে জেলা প্রশাসনে।

Advertisement

প্রশাসনের নির্দেশে সংক্রমণের শিখরে থাকা মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, দিল্লি এবং তামিলনাড়ু এই পাঁচটি রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই জন্য জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটিতে অন্তত দুটি করে প্রাতিষ্ঠিনিক কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে প্রত্যেকার লালারসের নমুনা পরীক্ষা হবে। কিন্তু,তাতেও সমস্যা মিটছে না। প্রশাসন সূত্রের খবর, গোল বেঁধেছে দুটি জায়গায়। এক, লালারসের নমুনা সংগ্রহের বেশ কিছু দিন পরে রিপোর্ট আসা। জেলা থেকে লালারসের নমুনা যাচ্ছে কলকাতার নাইসেড এবং দুর্গাপুরের সনকায়। দু’টি স্বাস্থ্য জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত আট হাজারের বেশি নমুনা সংগ্রহ করা হলেও বহু রিপোর্ট বকেয়া রয়েছে। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪১৩২ জনের লালারসের নমুনা পাঠানো হলেও রিপোর্ট মিলেছে মাত্র ১৩০৮ জনের। সম্পূর্ণ রিপোর্ট পেলে আক্রান্তের সংখ্যা কোথায় পৌঁছবে!

দ্বিতীয় সমস্যা হল, আক্রান্ত হলে এত রোগীর চিকিৎসা কোথায় হবে। কেননা, জেলায় উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে একমাত্র বোলপুরের কোভিড হাসপাতাল। সেটি মাত্র ৪০ শয্যার। রামপুরহাটের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমকে সম সংখ্যক শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করার কথা। এখনও সেটা হয়নি। তা হলে আক্রান্তদের নিয়ে যাওয়া হবে কোথায়? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মনে করাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত বীরভূমে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের ৯৯ শতাংশ উপসর্গহীন। ফলে তাঁদের কোভিড হাসপাতালে না রেখে আলাদা করে রাখলে অনেকটাই সুবিধে হবে। উপসর্গ দেখা দিলেই ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাবে। জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘সেই জন্য ১৯টি ব্লকে একটি এমন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। যাতে রিপোর্ট আসার আগে কারও উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে সেখানে সরানো যায়। রিপোর্ট নেগেটিভ হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করিয়ে ১৪ দিন পরে ছেড়়ে দেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement