অমিত শাহ সভা বাতিল। — ফাইল চিত্র।
বিজেপির জাতীয় স্তরের কর্মসূচির জন্য পিছিয়ে গেল বীরভূমে অমিত শাহের সভা।
বছরের শুরুতেই বীরভূমে আসার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তারাপীঠে পুজো দিয়ে জেলা সদর সিউড়িতে জনসভা করার কথা ছিল তাঁর। বিজেপির তরফে অমিত-সফরের সম্ভাব্য দিন জানানো হয়েছিল ১৭ জানুয়ারি। তবে ওই সময় দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক থাকায় পিছিয়ে গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জেলা সফর। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলছেন, ‘‘১৭ ও ১৮ দিল্লিতে বৈঠক থাকায় ওই সময় বীরভূমে আসা সম্ভব হচ্ছে না মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তবে তিনি নিশ্চয়ই জেলায় আসবেন।’’ যদিও এই মূহূর্তে দিনক্ষণ জানাচ্ছেন না বিজেপি নেতারা।
সোমবার সিউড়িতে এসে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, চলতি মাসেই বীরভূমে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ নিয়ে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন লকেট। ছিলেন ধ্রুব সাহা ও দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা-সহ অন্যরা। পরে অমিত শাহের জনসভার জন্য সিউড়ি শহরের বেণীমাধব ইনস্টিটিউশন ও কড়িধ্যা যদুরায় স্কুল সংলগ্ন দু’টি মাঠও পরিদর্শন করেছিলেন লকেট। বেণীমাধব স্কুল কর্তৃপক্ষের থেকে মাঠ চেয়ে আবেদনও করা হয়েছিল বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলায় শাহের সফর তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের জেলা বীরভূম থেকে শুরু হবে জেনে উজ্জীবিত ছিলেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। কিন্তু আপাতত সেই সম্ভাব্য সূচি বাতিল হওয়ায় নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাসে কিছুটা ভাটা পড়েছে। কটাক্ষের সুরে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক তো রাতারাতি ঠিক হয়নি। তাহলে বেছে বেছে ১৭ তারিখ তারিখ বীরভূম সফরের সূচির যুক্তি কী? সভার জন্য মাঠ পেয়েছে কি না জানতে হবে।’’
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রচারের মাঠ পেতে বিস্তর সমস্যায় পড়তে হয়েছিল জেলা বিজেপিকে। জানুয়ারিতে অমিত শাহের সভার জন্য পুরসভা, পুলিশ ও সেচ বিভাগের মাঠ না পেয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ধান জমির উপর সভা করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। তবে সে বার অসুস্থ হয়ে পড়ায় অবশ্য শাহ আসেননি। সে বছর এপ্রিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা থাকায় সিউড়িতে জেলা পুলিশের চাঁদমারি প্যারেড গ্রাউন্ড না পাওয়ায় শাহের সভা সরাতে হয়েছিল মহম্মদবাজারের গণপুরে। নরেন্দ্র মোদীর সভা বোলপুর শহর থেকে সরিয়ে ইলামবাজার ব্লকে করতে হয়েছিল।
যদিও এ বার মাঠ পাওয়া নিয়ে সেই সমস্যা হবে না বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতাদের দাবি, শাসক দল দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ। গরু-পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এখন বাধা দিতে গেলে শাসক দল বিপাকে পড়বে বলে দাবি বিজেপি নেতাদের। ধ্রুব সাহা বলছেন, ‘‘মাঠ পাওয়া নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভার দিন স্থির হোক তারপরই বোঝা যাবে কোনও বাধা আসে কি না।’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘যতই সভা করুক, বিধানসভা ভোটে এত প্রচার করেও বিজেপির যা ফল হয়েছিল এ বারও তাই হবে।’’