কলাভবনের নন্দন আর্ট গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী। নিজস্ব চিত্র
জাপানের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ও বিশ্বভারতীর সম্পর্ক নিয়ে এ বার বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী হল কলাভবনের নন্দন আর্ট গ্যালারিতে। সোমবার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে এই প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কলকাতায় অবস্থিত জাপানের কনসাল জেনারেল মাসায়ুকি তাগা।
সঙ্গে ছিলেন কলাভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয় মল্লিক, কলাভবনের অধ্যাপক আর.শিবকুমার, বিভিন্ন ভবনের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা ও ছাত্র-ছাত্রীরা।
শতবর্ষ উপলক্ষে বছরভর একাধিক অনুষ্ঠান হচ্ছে কলাভবন চত্বরে। কলাভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রদর্শনীতে জাপানের বিখ্যাত শিল্পী আড়াই কাম্পোর আঁকা একাধিক ছবি ও বিভিন্ন সময়ে শিল্পী আড়াই কাম্পোকে বিভিন্ন জনের পাঠানো চিঠিগুলি নিয়ে প্রদর্শনীর রূপ দেওয়া হয়েছে। জাপানের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীর্ঘ সখ্যতার নানা নিদর্শন রয়েছে বিভিন্ন বই ও চিঠিপত্রে। বহুবার তিনি জাপানের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে গিয়েছেন। সেখানকার বিভিন্ন মানুষ, বিখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গেও রবীন্দ্রনাথের ছিল নিবিড় সম্পর্ক। শিল্পী আড়াই কাম্পোর সঙ্গেও কবিগুরুর ছিল তেমনই সম্পর্ক। সেই সূত্র ধরে শান্তিনিকেতনের সঙ্গেও কাম্পোর সম্পর্ক তৈরি হয়। শুধু রবীন্দ্রনাথ নন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কলাভবনের বিখ্যাত শিল্পী নন্দলাল বসু, অসিত হালদার ,গৌরী বসুদের মতো শিল্পীদের সঙ্গেও যোগাযোগ তৈরি হয়। একে অপরের সহচর্যে আসার সুবাদে কাম্পোর সঙ্গে তাঁদের চিঠি দেওয়া-নেওয়া হয়েছিল।
এই প্রদর্শনীও সেই সম্পর্ককে ধরে রেখেছে। বিভিন্ন সময়ে শিল্পী আড়াই কাম্পোকে পাঠানো ৩২টি চিঠির প্রতিলিপি প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও জাপানের বিভিন্ন শিল্পীর আঁকা ২৬টি ছবি প্রদর্শনীতে জায়গা পেয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রদর্শনী খোলা থাকবে সর্ব সাধারণের জন্য। প্রদর্শনী ঘিরে সোমবার নন্দন আর্ট গ্যালারিতে আলোচনা চক্রের আয়োজন করেন কলাভবন কর্তৃপক্ষ। সেখানে বক্তব্য রাখেন জাপানের কনসাল জেনারেল মাসায়ুকি তাগা। এই প্রদর্শনী দেখতে জাপান থেকে বেশ কয়েক জন শিল্পীও এসেছেন। তাঁরা প্রদর্শনী দেখার পাশাপাশি এই প্রদর্শনীকে ঘিরে নাচ ,কবিতাপাঠ ও ছবি আঁকবেন বলে জানা গিয়েছে।
নন্দন আর্ট গ্যালারির ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর অমিতকুমার দণ্ড মনে করেন, ‘‘শতবর্ষে এমন প্রদর্শনী কলাভবনের ছাত্রছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’’