নিচুপট্টিতে সুনসান অনুব্রতর বাড়ির চারপাশ বুধবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
নিচুপট্টির সেই বাড়ি থেকে রাজনীতির উত্থান তাঁর। বাড়ির কর্তা, সেই অনুব্রত মণ্ডল এখন দিল্লিতে ইডির হেফাজতে। গৃহকর্ত্রী, তথা অনুব্রতর স্ত্রী কয়েক বছর হল প্রয়াত হয়েছেন। তাঁদের সন্তান সুকন্যাকেও ডেকেছে ইডি। তিনিও আপাতত বাড়ির বাইরে। তাই বোলপুরে জেলা তৃণমূল সভাপতির বাড়ি এখন কার্যত সুনসান।
বোলপুরের নিচুপট্টির ওই বাড়ি কয়েক মাস আগে পর্যন্ত লোকজনের ভিড়ে গমগম করত। এখন তার চারপাশ ঘিরে নৈঃশব্দ। পরিবারের ঘনিষ্ঠেরা জানাচ্ছেন, অনুব্রতর স্ত্রী বিয়োগের পর সুকন্যার কাছে বাবাই ছিলেন একমাত্র ভরসা, ভালবাসার জায়গা। অনুব্রত ও তাঁর একমাত্র মেয়ে সুকন্যা নিচুপট্টির নীল রং করা দোতলা বাড়িতেই থাকতেন। সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর সুকন্যা থাকতেন সেই বাড়িতে।
যে বাড়িতে এক সময় হাই প্রোফাইল নেতা-মন্ত্রীদের আনাগোনা লেগেই থাকতো, বাড়ির সামনে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো লাল-নীল বাতির গাড়ি, অনুব্রত গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার পরে সেই ছবিটা আমূল বদলে যায়। নিরাপত্তারক্ষীদের পাহারায় যে বাড়ি সবসময় মোড়া থাকতো, গত ১১ অগস্টর পর থেকে সেই বাড়ির চেহারাটা ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে। এখন ওই বাড়িতে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। গত কয়েকদিন আগে পর্যন্ত ওই বাড়িতে কেবল সুকন্যা, বাড়ির কয়েকজন পরিচারক আর হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র নিরাপত্তারক্ষী থাকছিলেন।
সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে ইডি হেফাজতে নিয়েছে। একই সঙ্গে তার মেয়ে সুকন্যাকেও দিল্লিতে তলব করেছে ইডি। ইতিমধ্যেই বোলপুরের বাড়ি থেকে চলে গিয়েছেন সুকন্যা। বুধবার অবশ্য তিনি দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজিরা দেননি। তবে তিনি বাড়ি ছাড়তেই বাড়ির কার্যত খালি হয়ে পড়েছে। এ দিনও সেখানে গিয়ে দেখা গেল কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী, দু-একজন পরিচারক ছাড়া গোটা বাড়ি কার্যত খালি। যে বাড়ি গমগম করত, সে বাড়িই এখন যেন খাঁ খাঁ করছে। অনুব্রত বাড়িতে যে চেয়ারে বসতেন সেই চেয়ারটিও ঢেকে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেশীরা এ দিন বলেন, “অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তার বাড়িতে নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে মানুষজনের আনাগোনা কমতে থাকে। গত কয়েক মাসে তেমন কাউকেই তার বাড়িতে আসতে দেখা যায়নি। সুকন্যাও বাড়ি থেকে কোথাও তেমন বেরোতেন না।”