চালকলের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের। নিজস্ব চিত্র।
গরু পাচার-কাণ্ডের তদন্তে নেমে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ‘যোগ রয়েছে’, এমন আরও একটি চালকলে হানা দিল সিবিআই। সোমবার সকালে বীরভূমে ‘শিবশম্ভু রাইসমিলে’ অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সঙ্গে ছিলেন ‘ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’র আধিকারিকরাও। ওই চালকলের আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। দুপুর ২টো ১৫ মিনিটে চালকল থেকে বেরোন তদন্তকারীরা।
সূত্রের খবর, এই চালকলের অংশীদারিত্ব রয়েছে অনুব্রতের ঘনিষ্ঠের। বোলপুরে জামবুনি যাওয়ার রাস্তায় ভুবনডাঙা সুকান্তপল্লি এলাকায় প্রায় ১০-১২ বিঘা জায়গার উপর রয়েছে ‘শিবশম্ভু’ চালকলটি। ওই চালকলে ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের’ আনাগোনা ছিল বলে স্থানীয়দের দাবি।
জানা গিয়েছে, বর্ধমানের অমিত অগ্রবাল নামে এক ব্যক্তি ২০ বছরের জন্য ওই চালকলের লিজ নিয়েছিলেন। পরে তিনি আত্মঘাতী হন। প্রচুর দেনা হয়। অমিতের মৃত্যুর পর শিবচরণ দাস এবং শিবানী ঘোষ নামে দু’জন লিজ নেন। সেই মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। মালিকপক্ষের দাবি, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে লিজেই চলছে এই চালকল। লিজ যে কেউ নিতে পারেন। সেটা ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ও হতে পারেন বা অন্য কেউ। এর সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই। স্থানীয় সূত্রে খবর, মালিকানায় নাম থাকা শিবানী ঘোষ সম্পর্কে অনুব্রতের দিদি। তাঁর ছেলের নাম রাজা ঘোষ। তিনি কেষ্টর ভাগ্নে। বোলপুরে রাজার নামে অন্য একটি চালকল রয়েছে বলে দাবি।
যদিও রাজা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, ওই চালকলে কখনও তিনি যাননি।
গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে গ্রেফতারের পর তাঁর একের পর এক সম্পত্তির হদিস পান তদন্তকারীরা। গত সপ্তাহেই ‘ভোলে বোম’ চালকলে হানা দেয় সিবিআই। ওই চালকলে থেকে দামি গাড়ির হদিস পান তদন্তকারীরা। পরে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে অনুব্রতের আইনজীবীরা জানান যে, শ্বশুরের থেকে উপহার হিসাবে ওই চালকল পেয়েছিলেন ‘কেষ্ট’।
লক্ষণীয়, ‘শিব-ভক্ত’ অনুব্রতের চালকলগুলিও মহাদেবের নামাঙ্কিত। ওই দুই চালকলের পাশাপাশি ‘শঙ্কর রাইসমিল’ও নজরে রয়েছে তদন্তকারীদের।