সভায় অনুব্রত। নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনের মুখে তাঁর নানা লব্জ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার অন্ত নেই। কখনও তিনি বলেন, ‘গুড়-বাতাসা’, কখনও বলেন, ‘চড়াম চড়াম’ শব্দে ঢাক বাজবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁর মুখেই শোনা গিয়েছে, ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে’। তা নিয়ে বিতর্ক বেধেছিল বিস্তর। কিন্তু, বদলাননি অনুব্রত মণ্ডল। এ বার সেই অনুব্রতই বলে দিলেন, ’২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ‘ভয়ঙ্কর খেলা’ হবে!
তাঁর নানা মন্তব্য নিয়ে বিরোধীরা বহু হইচই করলেও কিংবা নির্বাচন কমিশনে নালিশ হলেও নিজের জায়গায় অনড় থেকেছেন অনুব্রত। বস্তুত, দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে এমন নানা উক্তিই জেলা সভাপতির ‘ইউএসপি’ বলে মনে করেন তৃণমূলের ছোট-বড়-মাঝারি নেতারা। মঙ্গলবার মল্লারপুরে শিববাড়ি মাঠে তৃণমূলের ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক তৃণমূলের কর্মিসভা ছিল। সেই সভা থেকে অনুব্রত দাবি করেন, প্রাক-ভোট জনমত সমীক্ষায় তৃণমূলকে কম করে দেখানো হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর ২২০ থেকে ২৩০টি আসন পাবে বলে দাবি করেন অনুব্রত। এর পরেই হেঁয়ালির সুরে তিনি বলেন, ‘‘অনেক ধরনের খেলা আছে। তার মধ্যে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বল লেগে গিয়ে আঘাত লাগে, ফুটবল খেলতে গিয়ে লেগে যায়, আবার হাডুডু খেলায় হাত ভেঙে যায়। তেমনই ২১-এর ভোটে ভয়ঙ্কর খেলা হবে!’’
সভা শেষে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষও করেন বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি। সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, শুভেন্দুর আগামী দিনে কী অবস্থা হবে। অনুব্রত বলেন, ‘‘এর আগে এক জন গিয়েছেন। আমি তাঁর নাম করব না। এক মাসের মধ্যে তাঁর কী হয়েছিল, সবাই জানে। এ ক্ষেত্রেও (শুভেন্দু) এক মাস দেখুন না!’’ নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হলে তাঁকে পঞ্চাশ হাজার ভোটে হারাবেন বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। সে প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে অনুব্রত শুভেন্দুকে ‘পাগল-ছাগল’ বলেও কটাক্ষ করেন।
সোমবারই নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এ দিন মমতার সেই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। হাঁসন তেমাথা মোড়ে এবং নলহাটির কুশমোড়ে দলীয় সভায় উপস্থিত ছিলেন জ্যোর্তিময়। তিনি বলেন, “২০১১ সালে সিপিএমের যে রকম ১ নম্বর থেকে ২৭ নম্বর তালিকায় থাকা সমস্ত মন্ত্রী হেরেছিলেন, তেমনই ২০২১ সালে তৃণমূলের ১ নম্বর থেকে ৩০ নম্বর মন্ত্রী কেউ বিধানসভায় প্রবেশ করতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রী তাই সুরক্ষিত আসন খুঁজছেন। কিন্তু মানুষ সেই সুযোগ আর দেবেন না।”
এ দিন দুই জায়গাতেয় বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন বলে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি। তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে কেউ যোগদান করেছেন বলে আমার
জানা নেই।’’