অনুব্রত মণ্ডল ও অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
পরপর দু’দিন পঞ্চায়েত নির্বাচন স্বচ্ছ করার বার্তা দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার তিনি বলেছেন, তিনি চান না, বিরোধীরা বলুক, অনুব্রত মনোনয়ন জমা দিতে দেননি। এ বার সেই নিয়েই অনুব্রতকে এক হাত নিলেন বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার বোলপুরে একটি বেসরকারি অনুষ্ঠান ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে গত বিধানসভা ভোটে বোলপুরের প্রার্থী অনির্বাণ বলেন, ‘‘২০২৩ সাল এখন অনেক দূরে। তার আগে উনি( অনুব্রত) কী পরিস্থিতিতে থাকবেন, দলের মধ্যে থাকবেন না দলের বাইরে থাকবেন, তখন আদৌও বলতে হবে কি না অনুব্রত মনোনয়ন জমা দিতে দিচ্ছেন না। এ সব কিছু ২০২৩ কাছাকাছি আসুক, তার পরে বোঝা যাবে।’’ এর পাল্টায় অনুব্রত নিজেও তীব্র কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ‘‘অনুব্রত বলেন, ‘‘নাচতে না জানলে উঠোনের দোষ দিলে হবে না! কথায় কথায় অনুব্রত মণ্ডল মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি, এটা বললে শুনব না।’’
এর আগেও অনুব্রতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন অনির্বাণ। ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস। সেই সভায় তিনি যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন অনুব্রত। দীর্ঘ অসুস্থতার পর্ব কাটিয়ে ফের সক্রিয় রাজনীতিতে নামার কথাও বসেছেন। সে প্রসঙ্গেও কটাক্ষের সুরে এ দিন অনির্বাণ বলেন, ‘‘২০ জুলাই যদি তাঁকে আবার সিবিআই তলব করে, তা হলে কী করবে? আবার তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীকেও কটাক্ষ করে অনির্বাণ বলেন, ‘‘উনি উপদেশ, জ্ঞান সবাইকে দিয়ে বেড়ান। কিন্তু মহুয়া মৈত্রকে এখনও দল থেকে সাসপেন্ড করলেন না! উনি মহুয়া মৈত্রের অবান্তর কটূক্তিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।’’
অনির্বাণের কথায় অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দেননি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ওঁর (অনির্বাণ) কোনও রাজনৈতিক বুদ্ধিই নেই, ওই জন্য উনি এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন।’’ একই সঙ্গে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দেবেন তো ওই ভদ্রলোক। তাহলে আমি ওঁকে ধন্যবাদ জানাব। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি প্রার্থী দিলে আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাব। সবাই প্রার্থী দিয়ে ভোট করে জিতে আসুক, এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের লোকেরাও ভোট করে জিতে আসুক।’’
এ দিন তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় বোলপুর মহকুমা এবং পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট বিধানসভার কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন অনুব্রত। ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। সূত্রের খবর, এ দিনও স্বচ্ছ ভাবে ভোট করানোর নির্দেশ দেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল ভোট করতে না দেওয়ায় যেভাবে সমালোচনার মুখে পড়েছিল, সেই জায়গা থেকে আজ তারা এই ধরনের কথাবার্তা বলছে।”