ছেলেকে কোলে নিয়ে শোকার্ত অফিউদ্দিনের স্ত্রী। লক্ষ্মীডাঙা গ্রামের ছবি। — নিজস্ব চিত্র।
ওড়িশার পরে মুম্বই। ফের জেলার বাসিন্দা দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে।
সোমবারই ওড়িশা থেকে পাইকরের নয়াগ্রামে ফেরে দুই শ্রমিকের দেহ। সেই গ্রাম থেকে কিলোমিটার দুই দূরের লক্ষ্মীডাঙা গ্রামের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু সোমবারই হয়েছে মুম্বইয়ে। মুম্বইয়ের কান্দিভলিতে নির্মাণের কাজ করছিলেন আফিউদ্দিন শেখ (৩৫) ও ছোটু শেখ (২৩)। এ দিন কোমরের বেল্ট ছিঁড়ে তেরো তলা থেকে মাটিতে পড়ে যান দু’জন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানা যায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতদের পরিবার ও স্থানীয়দের একাংশ জানান, মাস পাঁচেক আগে কাজে গিয়েছিলেন আফিউদ্দিন ও ছোটু। অভাবের সংসারে এলাকায় কাজ না থাকায় তাঁরা মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন বলে দাবি পরিজনদের। এ ভাবে দুই প্রাণ চলে যাওয়ায় দিশাহারা দুই পরিবার। সংসার চলবে কী ভাবে তা ভেবে পাচ্ছেন না দুই শ্রমিকের পরিজনেরা।
এমনকি, মুম্বই থেকে দেহ আনারও সামর্থ্য নেই দুই শ্রমিকের পরিজনের। তাঁরা জানান, মুম্বই থেকে দেহ আনতে গাড়ির খরচ হবে দু’লক্ষ টাকা। তাঁদের কথায়, ‘‘এত টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে! বাড়ির সব বিক্রি করলেও এক সঙ্গে দু’লক্ষ টাকা জোগাড় হবে না।’’ প্রশাসনের কাছে দেহ নিয়ে আসার জন্য তাঁরা আবেদন জানাবেন বলে জানান তাঁরা। মৃত আফিউদ্দিনের বাবা আসিমুদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘অভাবের সংসারে ছেলের টাকায় পাঁচ জনের পেট চলত। প্রত্যেক মাসে টাকা পাঠাতো। সংসার নিয়ে ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। প্রশাসনের কাছে আবেদন করব দেহ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করলে একবারের জন্য দেখতে পাব।’’ ছোটুর বাবা আয়রাতি শেখ বলেন, ‘‘পাঁচ বছরের ছোট্ট নাতিকে কেমন করে বড় করব?’’
বিডিও (মুরারই ২) মহম্মদ নাজির হোসেন বলেন, ‘‘ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সরকারি যে সব সাহায্য আছে তা পরিবারকে দেওয়া হবে।’’