অমর্ত্য সেন (ডান দিকে)। এবং তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’। —ফাইল চিত্র।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের ‘বিতর্কিত’ জমি সংলগ্ন এলাকায় যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় সে জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। এর প্রেক্ষিতে সোমবার অমর্ত্যের বাড়ি ‘প্রতীচী’ এবং বাড়ি সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করলেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং অমর্ত্যের পক্ষে প্রতিনিধিরা। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে জমির মাপজোকের পর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা জানান, রিপোর্ট আকারে তাঁরা আদালতের কাছে তথ্য জমা দেবেন।
দীর্ঘ দিন ধরে চলা জমি বিতর্কে বিশ্বভারতী বারবার দাবি করেছে অমর্ত্যের লিজ নেওয়া জমির পরিমাণ ১.৩৮ একর নয়, ১.২৫ একর। অর্থাৎ তিনি বিশ্বভারতীর ১৩ শতক জমি ‘জবরদখল’ করে রেখেছেন। এই মর্মে অমর্ত্যকে আইনি নোটিস পাঠিয়ে জমি হস্তান্তরের দাবি করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই জমি নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছেন অমর্ত্য। এই মুহূর্তে অমর্ত্য বিদেশে থাকলেও জমি পুনরুদ্ধারে মরিয়া কর্তৃপক্ষ। ওই জমি সংলগ্ন এলাকায় যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় সে জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন অমর্ত্যের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী। অমর্ত্যের অবর্তমানে বিশ্বভারতী যাতে বর্ধিত সময়ে দেয় সেই অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন গোরাচাঁদ। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও ‘কড়া পদক্ষেপ’ করার দিকে এগোচ্ছে বিশ্বভারতী। এই খবর পাওয়ার পর অমর্ত্যের অবর্তমানে যাতে তাঁর জমি সংলগ্ন এলাকায় কোনও শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ না হয় এই মর্মে ১৪৫ ধারা চেয়ে প্রশাসনের কাছে বুধবার আবেদন জানান অমর্ত্যের আইনজীবী। সেই মতোই ওই জমির উপর ১৪৫ ধারা জারি হয়। ওই প্রেক্ষিতে অমর্ত্যের বাড়িতে পৌঁছে যান বিএলআরও দফতরের আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে যে আমিন ছিলেন, তাঁকে দিয়ে জমি মাপানো হয়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এর রিপোর্ট একদিকে যেমন এসডিও দফতরে জমা পড়বে, তেমনই আদালতেও জমা দেওয়া হবে। এ নিয়ে বোলপুর বিএলআরও দফতরের আধিকারিক গৌতম সাহা বলেন, ‘‘আমরা ১৪৫ ধারার জারির পরিপ্রেক্ষিতে ‘বিতর্কিত’ জমি পরিদর্শন করতে এসেছিলাম। এ নিয়ে আগেই দুই পক্ষকে নোটিস দেওয়া হয়। জমি কী অবস্থায় রয়েছে, তা দেখে গেলাম। আগামিদিনে এই রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হবে।’’ উল্লেখ্য, সম্পত্তি অবৈধ ভাবে দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১৪৫ ধারা জারির আবেদন করা হয়।