বিজয় মিছিলের পরে তৃণমূল এবং সিপিএম কর্মী সমর্থকদের বচসায় উত্তেজনা ছড়াল। রবিবার বিকেলে পুঞ্চার টাটাডি গ্রামের ঘটনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সোমবারও সারা দিন গ্রামে টহল দিয়েছেন পুলিশ কর্মীরা।
রবিবার ওই এলাকায় তৃণমূলের বিজয় মিছিল ছিল। বেলা তিনটে নাগাদ মিছিল শেষ হয়। স্থানীয় সিপিএম কর্মী কর্ণ সিং সর্দার জানান, গ্রামের মন্দিরে হরিনাম সংকীর্তনের জন্য মঞ্চ তৈরি করছিলেন তিনি এবং গ্রামের আরও কয়েক জন। তাঁরা প্রত্যেকেই সিপিএম সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। পাশেই রাস্তার উপরে উনুন বানিয়ে খিচুড়ি রান্না করা হয়েছিল তাঁদের খাওয়ার জন্য। কর্ণবাবুর দাবি, মিছিল শেষ হওয়ার পরে কুসুমটিকরি গ্রামের তৃণমূল কর্মী সঞ্জিত সিং সর্দার আরও কয়েক জনকে নিয়ে তাঁদের সামনে হাজির হন। ওই তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে খেতে চান। কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললে ওই তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা রাজি হননি বলে কর্ণবাবুর দাবি। বিষয়টি বচসার দিকে গড়ায়। কর্ণবাবুর অভিযোগ, সঞ্জিতবাবু হঠাৎ রাস্তার থেকে ধুলোবালি কু়ড়িয়ে খাবারের কড়াইয়ে ফেলে দেন। প্রতিবাদ করলে সঞ্জিতবাবু তাঁকে মারধরও করেন বলে কর্ণবাবুর অভিযোগ।
খবর কানে যেতেই ঘটনাস্থলে যান সিপিএম নেতারা। এ দিকে মিছিল শেষে ঘরে ফিরে যাওয়া গ্রামের তৃণমূল কর্মীরাও ছুটে আসেন। পুরো ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ায় গোলমাল বেশি দূর গড়ায়নি। সিপিএমের পুঞ্চা জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক তথা টাটাডি গ্রামের বাসিন্দা বিপদতারণ শেখরবাবুর অভিযোগ, ‘‘মিছিলের পরে পায়ে পা লাগিয়ে ঝামেলা পাকিয়েছেন ওই তৃণমূল কর্মীরা।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র মাহাতো বলেন, ‘‘পুলিশের অনুমতি নিয়েই বিজয় মিছিল হয়েছিল। মিছিল পণ্ড করার জন্য সিপিএম পরিকল্পনা করে ঝামেলা পাকিয়েছে। না হলে কয়েক জনের জন্য রাস্তায় উনুন বানিয়ে খাবার বানানোর হঠাৎ কী দরকার হয়েছিল!’’ কৃষ্ণচন্দ্রবাবুর দাবি, তিনি সেই সময় গ্রামের বাইরে ছিলেন। ফোনে কর্মীরা বিষয়টি তাঁকে জানালে তাঁদের সংযত থাকার নির্দেশ দেন। তবে এ দিন পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছে সব ক’টি রাজনৈতিক দলই। জেলার এক পদস্থ পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় সব মিটে গেলেও গ্রামে যাতে নতুন করে আর উত্তেজনা না ছড়ায় সে জন্য সোমবারও টহল দেওয়া হয়েছে।’’