নিয়ম না মেনেই চলছে পাথর ক্রাশার। নিজস্ব চিত্র।
নেই জাতীয় পরিবেশ আদালত, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র সহ আরও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় নথি। তাও বীরভূম জেলা জুড়ে দিব্বি রমরমিয়ে চলছে পাথর খাদান এবং ক্রাশার। অভিযোগ, বীরভূমের মহম্মদবাজার, পাচামি, তালবাঁধ, নলহাটি, রামপুরহাট, শালবাদরার মতো জায়গায় প্রশাসনের পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে এ ভাবেই দিনের পর দিন বেআইনি পাথর খাদান এবং ক্রাশার চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে–
১. নিয়ম মতো, খাদান থেকে তোলা পাথরের পরিমাণ দেখিয়ে কর দিতে হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেই হিসাবেও গরমিল থাকে। যে পরিমাণ পাথর তোলা হয়, তার সম্পূর্ণ হিসাব দেওয়া হয় না। ফাঁকি দেওয়া হয় করে।
২. অধিকাংশ পাথর খাদান ও ক্রাশার আবার সরকারি ভাবে নথিভুক্তই নয়। ফলে সরকারি কোষাগারে এদের থেকে কোনও করই জমা পড়ে না।
৩. অধিকাংশের কাছে নেই জাতীয় পরিবেশ আদালতের ছাড়পত্র।
৪. খাদান ও ক্রাশারে কর্মরত শ্রমিকদের বিমা থাকা বাধ্যতামূলক। অধিকাংশ শ্রমিকদেরই তা করানো হয়নি। এমনকী তাঁদের জন্য সুরক্ষার পোষাকও নেই।
৫. পাথর খাদান ও ক্রাশারের পাশেই রাখতে হয় পর্যাপ্ত জলাশয়। কিন্তু অধিকাংশের ক্ষেত্রেই তা নেই ।
৬. পাথরের গুঁড়ো যাতে আকাশে না উড়ে বেড়ায়, তার ব্যবস্থা করতে হয়। সে সবও নেই।
৭. বীরভূমের জনবহুল রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত পাথর বোঝাই করে চলে ট্রাক, ডাম্পার।
বীরভূম জুড়ে মাত্র ২১৭টি পাথর খাদান ও ক্রাশার সরকারি খাতায় নথিভুক্ত রয়েছে, যাদের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। অভিযোগ, এর বাইরে ১৪০০টিরও বেশি ছোট বড় পাথর ক্রাশার এবং খাদান চলছে কোনও রকম সরকারি অনুমোদন ছাড়াই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাথর ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, জেলায় ৯০ শতাংশ পাথর কারবার অবৈধ ভাবেই চলে। প্রশাসনও সেভাবে নজর দেয় না। বীরভূমের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শ্বেতা আগরওয়াল বললেন, “আমি সদ্য এই পদে যোগ দিয়েছি। তবে বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখব। প্রয়োজনে পদক্ষেপও করা হবে।”